কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে প্রকাশ্য দিবালোকে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কক্সবাজার জেলা শাখার অন্তর্গত চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহাল বাজার ইউনিটের যুব সেক্রেটারি হাফেজ আমজাদ হোসেন (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহাল বাজার এলাকায় হাফেজ আমজাদকে ওঁৎ পেতে থাকা ছাত্রলীগ নেতা রাফি ও তার সহযোগীরা একটি দোকানে ডেকে নেয়। কিছুক্ষণ পরেই পরিকল্পিতভাবে তার ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, হাফেজ আমজাদ হোসেন কয়েক বছর সৌদি আরবে থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফেরেন এবং গ্রামে ফিরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং জনপ্রিয়তা প্রতিপক্ষের নজরে পড়ে যায় বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তিনি পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবার, রাজনৈতিক সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
হাসপাতাল প্রাঙ্গণে স্বজনদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মা-বাবা ও ভাইবোনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো হাসপাতাল এলাকা। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত খুনিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।জামায়াত নেতৃবৃন্দ একে একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা দ্রুত বিচার দাবি করেছেন এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন।