উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট আকার ধারণ করেছে। ক্রমশ এটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে আগামীকাল ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এছাড়া, সমুদ্রপৃষ্ঠে এখন ২৯-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে, যা একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য সহায়ক।
বিজ্ঞাপন
তবে, মাঝারি থেকে উচ্চ ভার্টিক্যাল উইন্ড শিয়ারের কারণে শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি না হলেও আগামী পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে সারাদেশে। বিশেষ করে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে উপকূলীয় অঞ্চলে।
এদিকে সুস্পষ্ট লঘুচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। ফলে, উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড়ের আশঙ্কায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরের জন্য ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমের (বিডব্লিউওটি) পৃথক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
এর মধ্যে, বিডব্লিউওটি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরির অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এখন ২৯-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রয়েছে, যা একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য সহায়ক। অবশ্য, মাঝারি থেকে উচ্চ ভার্টিক্যাল উইন্ড শিয়ারের কারণে এটি সম্ভবত ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে না। এই সিস্টেমটি সর্বোচ্চ মৌসুমি নিম্নচাপ হিসেবেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। তবে, ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল থাকতে পারে।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পরে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকায় দু-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
বিজ্ঞাপন
পরদিন রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশালে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আগামী সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এরপর মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশালে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া, বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে ভারী বর্ষণ এবং সমুদ্র উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় বলা হয়, সকালে লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও মধ্যবঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এ অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।