বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। জনগণ একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়, এবং বিএনপি সেটাই নিশ্চিত করতে চায়।
সম্প্রতি ঢাকার গুলশানে ভারতের ‘এই সময়’ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। নির্বাচন হবে উৎসবমুখর পরিবেশে। ফেব্রুয়ারিতেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে, কোনো ধরনের অশান্তি হবে না।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই নির্বাচন চায় এবং প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেনাবাহিনীও নির্বাচনের পর ব্যারাকে ফিরতে আগ্রহী।
জামায়াত ও এনসিপি নিয়ে অবস্থান
সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল জানান, জামায়াতে ইসলামী ৩০টি আসন চাইলেও বিএনপি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তিনি বলেন, “জামায়াতের প্রভাব যতটা না, আমরা অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছি। এবার আর তাদের মাথায় তুলে রাখা হবে না।”
এনসিপিকে তিনি এখন আর বড় কোনো রাজনৈতিক শক্তি মনে করেন না। বিএনপি মনে করে এনসিপির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিএনপিকে সরকার গঠনে বাধা দেওয়া।
ইউনূসের ভূমিকা ও ভারত প্রসঙ্গ
মির্জা ফখরুল জানান, ড. ইউনূস এখন নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি নিজেই বলেছেন, মার্চের আগেই নির্বাচন না হলে তিনি সরে যাবেন। এই বিষয়টিকে “এক ধরনের চূড়ান্ত সতর্কবার্তা” হিসেবে ব্যাখ্যা করেন ফখরুল।
ভারতের প্রভাব নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে সম্পর্কযুক্ত। তবে ভারতের নীতিনির্ধারকেরা শুধু আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ হিসেবে দেখেছেন, যা ভুল ছিল।” তিনি জানান, বিএনপি ভারত-বিরোধী নয় বরং চায় প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে সুসম্পর্ক বজায় থাকুক।
সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায় বিএনপি
ফখরুল বলেন, “আমরা চাই আওয়ামী লীগ, তাদের জোটসঙ্গীরা এবং জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নিক। একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে ভোট হোক।” তিনি এটাও বলেন, “শেখ হাসিনার মতো আমরা প্রতিপক্ষকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পথ নেব না। জনগণের মধ্যে পরিবর্তনের ইচ্ছা স্পষ্ট।”
ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের প্রত্যাশা
বিএনপি মহাসচিব জানান, তিনি চান ভারত সব দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুক। তিনি বলেন, “আমরা কলকাতা যাব, বই কিনব, সিনেমা ও থিয়েটার দেখব। মানুষের মধ্যে মুক্ত যোগাযোগ গড়ে উঠুক, ভুল বোঝাবুঝি দূর হোক।”