সাকিব আল হাসানকে নিয়ে নতুন করে আওয়াজ উঠছিল। ক্রিকেটাঙ্গনের কেউ কেউ তাকে রাজনৈতিক লেন্সের বাইরে গিয়ে দেখার কথা বলছিলেন। তার হয়ে ঝাণ্ডা ধরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন সাবেক ক্রিকেটারদের একটা অংশ। এককথায় সাবেক এই অধিনায়ককে জাতীয় দলে ফেরানোর দৃশ্যপট রচিত হচ্ছিল।
কিন্তু গত ১৫ আগস্ট তাদের সে ‘প্রচেষ্টায়’ যেন পানি ঢেলে দিলেন সাকিব নিজেই। সেদিন ফেসবুকে একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেছেন তিনি। যেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও তার পরিবারের সব সদস্যের ছবি দিয়েছিলেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, তার পরিবারের সব শহীদ সদস্যের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
এই একটি পোস্টে সাকিবের দেশে ফেরার ক্ষীণ সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেল কিনা, তা নিয়ে দেশের ক্রিকেট মহলে জোর আলোচনা চলছে। অনেকেই ভাবছেন, ১৫ আগস্টের এই ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’ বোধহয় সাকিবের জাতীয় দলে ফেরার দুয়ার স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
দেশের একটি গণমাধ্যম ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সাকিবের ফেসবুক পোস্ট সরকারের নজরে এসেছে। এখন তারা সাকিবের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাতে রাজি না। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে যতটুকু সম্ভাবনা ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্রের দাবি, ‘২০২৪ পরবর্তী যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী তারা কেউ ২০২৪ পরবর্তী সরকারের সঙ্গে যায় না। সাধারণ মানুষের উপলব্ধি তারা বুঝতে পারছেন না। সাকিব নিজের সুযোগ নিজেই নষ্ট করলো। শেষ সম্ভাবনা যতটুকু ছিল, তা নষ্ট করলো। তাকে সহযোগিতা করার কোনো স্কোপ নেই।’
জাতীয় দলে সাকিবের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল বর্তমান বোর্ডের। আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হওয়ার পর সাকিবের বিষয়ে ইতিবাচক স্বরেই কথা বলেছেন। তবে নতুন বিতর্কে জড়িয়ে সাকিব যেন জাতীয় দল থেকে আরও দূরে সরে গেলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব। যদিও সে নির্বাচনকে ‘প্রহসন’-এর নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলো।
গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হওয়ার পর আর দেশে ফেরেননি আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাকিব। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কিছু স্থিরচিত্র ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে এক গার্মেন্টসকর্মী হত্যা মামলায় সাকিবকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারির বেশকিছু অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।