Tuesday, October 14, 2025

ভাত না খেয়ে ৪৫ বছর

আরও পড়ুন

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার নগর গ্রামে ঘটেছে এক চমকপ্রদ ও বিস্ময়কর ঘটনা। গ্রামের মৃত নুর আলীর ছেলে বিপ্লব (৫০) প্রায় ৪৫ বছর ভাত না খেয়ে সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। যেখানে বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত, সেখানে এত বছর ভাত ছাড়া একজন মানুষের টিকে থাকা সত্যিই অবিশ্বাস্য।

পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই বিপ্লব ভাত খেতে পারতেন না। প্রথমদিকে পরিবার ভেবেছিল খামখেয়ালি বা শখের কারণে এমনটা হচ্ছে। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই স্পষ্ট হয়—ভাত খেলেই তার শরীরে অস্বস্তি ও বমিভাব শুরু হয়। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। শেষে পরিবার ভাত খাওয়ানো বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুনঃ  বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসিফ আকবরের জয়লাভ

ভাত বাদ দিয়ে বিপ্লব রুটি, সবজি, ডাল, মাছ, মাংস ও ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ শুরু করেন। আশ্চর্যের বিষয়, দীর্ঘ ৪৫ বছর ভাত না খেয়েও তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রধানত রুটি, শাকসবজি ও মাছ-মাংসই থাকে।

বিপ্লবের বড় ভাই স্বপন মিয়া বলেন, ‘আমরা ভাত ছাড়া একদিনও থাকতে পারি না, অথচ আমার ভাই ৪৫ বছর ধরে ভাত মুখে দেয়নি। আল্লাহর অশেষ রহমতে সে একেবারেই সুস্থ আছে।’

আরও পড়ুনঃ  ‘আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে সে, তাই মাইরা ফেললাম’

তার প্রতিবেশীরাও বিষয়টিকে আশ্চর্যের চোখে দেখেন। গ্রামের এক বয়স্ক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা অনেকবার দেখেছি, উৎসব কিংবা দাওয়াতে গিয়েও তিনি ভাত স্পর্শ করেন না। শুধু অন্য খাবার খেলেই তার চলে যায়।’

স্থানীয় চিকিৎসকরা জানান, এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা। মানবদেহের জন্য ভাত বা চালজাত খাদ্য প্রধান শক্তির উৎস হলেও কিছু মানুষ জেনেটিক বা শারীরিক কারণে তা সহ্য করতে পারেন না। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে খাদ্য-অসহিষ্ণুতা বলা হয়। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ভাত ছাড়া সুস্থ থাকা সত্যিই ব্যতিক্রমী।

আরও পড়ুনঃ  রাসিকের সাবেক মেয়রের চাচার বাড়ি ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী, জানা গেল কারণ

এমন এক অস্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপ্লবকে এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। নিকলী উপজেলায় এখন প্রায় সবাই তাকে ‘ভাত ছাড়া মানুষ’ নামে ডাকেন। অনেকেই তার সঙ্গে দেখা করে বিস্মিত হন এবং নিজের চোখে বিষয়টি নিশ্চিত হতে চান।

বাংলাদেশের মতো ভাতপ্রধান দেশে একজন মানুষ ৪৫ বছর ধরে ভাত না খেয়েও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন—এটি নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে এমন ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা গেলে তা চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দৃষ্টান্ত হতে পারে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

জনপ্রিয় সংবাদ