২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি ভারতীয় শ্রমিক ইসরায়েলে গেছে। দখলদার দেশটিতে ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের শূন্যস্থান পূরণে কাজে লাগানো হচ্ছে তাদের। সোমবার (১১ আগস্ট) মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদেন এ তথ্য জানানো হয়।
এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইসরায়েলের প্রতি চাপ বাড়ার সময় ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরছে। গত সপ্তাহে ভারতের সংসদে একজন আইনপ্রণেতার প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার কর্মী ইসরায়েলে গিয়েছেন।
কীর্তি বর্ধন সিং জানান, এর মধ্যে ৬ হাজার ৭৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক এবং ৪৪ জন পরিচর্যাকারী ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে সই দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় গেছেন। এছাড়া, বেসরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে ৭ হাজার জন পরিচর্যাকারী এবং ৬ হাজার ৪০০ জন নির্মাণশ্রমিক দখলদার দেশটিতে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ইসরায়েলের গাজা অভিযানে ১৮ হাজার ৪৩০ জনের বেশি শিশুসহ ৬১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যুদ্ধকে বহু দেশের সরকার, মানবাধিকার সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে। এসব ঘটনার মধ্যেই ইসরায়েলের শ্রমিক সংকট পূরণ করছে ভারতীয়রা।
যদ্ধের কারণে বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধাবস্থায় ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করার ফলে বিভিন্ন খাতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নির্মাণ খাত দ্রুত স্থবির হয়ে পড়ে এবং শ্রমিক সংকটের ফলে ব্যয় বেড়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় ইসরায়েল নির্মাণ শ্রমিক সংগঠন ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল সরকারকে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগের সুপারিশ করেছিল।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের রিক্রুটমেন্ট কেন্দ্রে হাজার হাজার শ্রমিক দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে চাকরির সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছেন এখনো। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই দৃশ্য ভারতের দ্রুত উন্নয়নের কথিত চকচকে চিত্রের উল্টোপিঠ।
গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের সময় ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের পরিবর্তে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগের প্রচেষ্টার কারণে অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নস শ্রমিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছিল। ঝুঁকি এবং কষ্ট বিবেচনায় প্রকল্পটিকে আত্মঘাতী বলেও উল্লেখ করেছিল সংগঠনটি।