গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা সরাসরি এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হলেও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ভোটগণনায় প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত না করায় ফলাফল নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া গণনায় কোনো প্রার্থীর এজেন্ট বা সাংবাদিককে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী শেখ খোদার নূর ইসলাম বলেন, আজ গকসু নির্বাচনে ভোট গণনার সময় ভেতরে কোনো অবজার্ভার রাখা হচ্ছে না, কোনো পোলিং এজেন্টও নাই। এটা উচিত না। একে তো এখানে কোনো প্রার্থী এজেন্ট নাই, দ্বিতীয়ত কোনো সাংবাদিকদের রাখা হয়নি। সুতরাং এই ফলাফল কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে আমরা সন্ধিহান।
বিজ্ঞাপন
অন্য একজন সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী রাকিব জানান, এখানে একটা বড় খটকার জায়গা হচ্ছে এখানে কোনো সাংবাদিকই যেতে দেওয়া হচ্ছে না। অবজার্ভ করার জন্য কোনো প্রতিনিধি যেতে দিচ্ছে না। ফলে ভোট যে একজনের টা অন্যজনের নামে যাবে না এ নিশ্চয়তা কোথায়?
এজিএস পদপ্রার্থী শিশির আহমেদ বলেন, যে পদ্ধতিতে ভোট গণনা হচ্ছে সেটা আমরা কীভাবে ভরসা রাখতে পারি? একে তো স্ক্রিনে কিছু ক্লিয়ার না। আবার গণনার জায়গায় কোনো সংবাদমাধ্যমকে রাখা হয়নি। এখানে তো কোনো সংখ্যাও দেখা যাচ্ছে না। এখানে প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক রাখলে আমরা মেনে নেব।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে পদ্ধতিতে গণনা করা হচ্ছে এখানে কনো সন্দেহ থাকার সুযোগ নাই। সম্পূর্ণ ভোট শেষে সন্দেহ থাকলে প্রার্থী নিজেই চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।
সাংবাদিক রাখার বিষয়ে জানান, টোটাল ভোট কাউন্টিং ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিক রাখার বিষয়ে গকসু কমিশনের সাথে আলাপ করে জানানো হবে।
ক্যাম্পাসের ট্রান্সপোর্ট চত্বরে জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিনে ভোটগণনার চিত্র দেখানো হলেও প্রত্যক্ষ তদারকির সুযোগ না থাকায় প্রার্থীরা স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রার্থীরা।
এখন ফলাফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।
নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ড. ফুয়াদ হোসেন বলেন, প্রতি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের জন্য ৬ জন শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন। তারাই ভোট গণনা করে ফলাফল কন্ট্রোল রুমে জমা দেবেন। সেখানে তাদের ৬ জনেরই স্বাক্ষর থাকবে। এসবই সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে। বাইরে থেকে সবাই দেখতে পাচ্ছেন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রর জন্য নির্দিষ্ট ক্রমিক নং সম্বলিত ব্যালট পেপার আছে। তাই স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে। মোট ৬৩ জন প্রার্থী, ৫০জন পর্যবেক্ষক। কতজনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেব? শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই পরবর্তীতে তাদের মনোনীত হিসেবে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির পাঁচজন সদস্যকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে। তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি আরও বলেন, তারপরেও যদি কোনো প্রার্থীর ফলাফল নিয়ে সন্দেহ হয় তিনি ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে নিজে ব্যালট গুনে দেখতে পারবেন। ফলাফলে যদি কোনো পরিবর্তন না আসে তাকে কিন্তু তখন নির্বাচন ও স্বচ্ছতা নিয়ে মিথ্যাচার করার দায় নিতে হবে।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস)সভাপতি সানিজিদা পিংকি বলেন, আমাদের ভোটকেন্দ্রের বাইরে করিডোর পর্যন্ত প্রবেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ভোট গণনা শুরু হওয়ার ৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে গণনা সরাসরি দেখার সুযোগ দেয়া হয়নি। রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে জানালা থেকে যতটুক সম্ভব আমরা দেখছি। করিডোরে প্রবেশের অনুমতি মিললেও, গকসুর ভোট গণনার ছবি-ভিডিও তোলায় আপত্তি জানিয়েছে প্রশাসন।
পরে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর লাইভ করার অনুমতি পেয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।