Monday, August 25, 2025

শেখ হাসিনাকে দিয়েই শুরু হোক এই অভিযান, আসাদউদ্দিন ওয়েইসি

আরও পড়ুন

ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন হায়দরাবাদ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি বলেছেন, সরকার সত্যি সত্যিই যদি অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে আগ্রহী হয়, তাহলে এখনই শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হোক। তাঁকে দিয়েই শুরু হোক এ অভিযান।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘আইডিয়া এক্সচেঞ্জ’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রভাবশালী এই ভারতীয় রাজনীতিবিদ। ওয়েইসি অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন এ দেশে রয়েছেন? তিনিও তো বাংলাদেশি, তাই না? তাঁকেও ফেরত পাঠানো হোক। ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে বসবাস করছেন।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার ‘আইডিয়া এক্সচেঞ্জ’ অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাঁদের অভিমত জানতে চাওয়া হয়। হাসিনা–সম্পর্কিত প্রশ্নটি উঠেছিল অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাভাষীদের যেভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, সীমান্তে নিয়ে জবরদস্তি ফেরত পাঠানো হচ্ছে, সে বিষয়ে।

আরও পড়ুনঃ  আইন*জীবী আলিফ হ*ত্যা: তদন্ত কমিটি থেকে অব্যা*হতি চেয়েছেন সব সদস্য

ওয়েইসি এ প্রসঙ্গে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশকে অনুপ্রবেশকারীমুক্ত করতে হলে শেখ হাসিনাকে দিয়েই শুরু করা উচিত। আমরা কেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে দেশে রেখেছি? তিনিও তো বাংলাদেশি? তাঁকে ফেরত পাঠানো হোক।’

লোকসভার এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভ্যুত্থানকে ভারতের মেনে নেওয়া উচিত। নতুন সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার।

ওয়েইসি আরও বলেন, একদিকে একজন বাংলাদেশিকে আমরা এ দেশে থাকতে দিচ্ছি। তিনি নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, বিবৃতি দিচ্ছেন। সমস্যা সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলার দরিদ্র বাংলাভাষী নাগরিকদের পুনে থেকে উড়োজাহাজে চাপিয়ে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সীমান্তে গিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা সত্যিই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কি না, সেটা যাচাই পর্যন্ত করা হচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ  ‘এক রাফির হি*সাবেই ৩২ কোটি টাকা’ নিয়ে যা বললেন হা*সনাত আব্দুল্লাহ

তিনি বলেন, দেশে যিনিই বাংলা ভাষায় কথা বলছেন, তিনি বাংলাদেশি হয়ে যাচ্ছেন। কী ধরনের বিদেশাতঙ্ক কাজ করছে, এ থেকে বোঝা যায়। এসব মানুষকে বন্দিশালায় আটকে রাখার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? এখানে সবাই পাহারাদার হয়ে গেছে।

ক্ষমতাসীন বিজেপির সমালোচনা করেন ওয়েইসি। বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নামে যা চলছে, সেটার বিরোধিতা করেন তিনি। বলেন, ভোটার তালিকা থেকে বৈধ নাগরিকদের, বিশেষ করে মুসলিমদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত নাগরিকদের নাম বাদ গেলে তখন তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।বিহারে এর আগের নির্বাচনে তাঁর নিজের দলের সমর্থকদের এ অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে ওয়েইসি জানান।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনে করে ভারত

অনুপ্রবেশকারীদের জবরদস্তি বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে। প্রধানত, পশ্চিমবঙ্গ, আসামের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এ কাজ করছে। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ তীব্র হয়েছে।

বাংলাভাষী ভারতীয় মুসলিমদের যাঁরা ভিনরাজ্যে কোনো না কোনো পেশার সঙ্গে যুক্ত, বিশেষ করে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে যাঁরা শ্রমিক হিসেবে রয়েছেন, তাঁদের নিত্য হয়রানি সহ্য করতে হচ্ছে। হেনস্তা হতে হচ্ছে।

বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতেই এই ধরপাকড় বেশি হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সংসদেও প্রতিবাদ করছে। বাংলাভাষী ভারতীয়দের হেনস্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ