ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে একজন শিক্ষিকা ১৩ বছর বয়সী এক বালকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। সেই সম্পর্কের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে একটি সন্তান প্রসব করেন। এখন ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে সেই সন্তানের পিতা ১৩ বছরের ওই বালক। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির। অনলাইন ডেইলি মেইল এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, শিক্ষিকার নাম লরা ক্যারন (২৫)। বুধবার সকালে নিউ জার্সির কেপ মে আদালতে যৌন নির্যাতনের মামলার শুনানিতে হাজির হন তিনি।
সাদা পোশাকে গম্ভীর ভঙ্গিতে হাজির হওয়া মিডল টাউনশিপ এলিমেন্টারি স্কুলের এই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষিকাকে আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল। তার আইনজীবী জন ডব্লিউ টুমেলটি বিচারকের কাছে আরও সময় চান। মামলার অগ্রগতি চলাকালীন ক্যারনকে তার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০১৯ সালে তিনি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিএনএ টেস্টে দেখা গেছে, ওই ছেলেই সন্তানের পিতা। ফলে, এখন মামলার সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে।
প্রসিকিউশন পক্ষ আগে ক্যারনকে দোষ স্বীকারের বিনিময়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব দেয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ক্যারনের কমপক্ষে ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। শুনানির পর তিনি দ্রুত আদালত থেকে বেরিয়ে পড়েন এবং একজন আলোকচিত্রী থেকে মুখ আড়াল করতে কালো জ্যাকেট ব্যবহার করেন। কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। ক্যারনের সঙ্গে ছিলেন তার ভাই ও বাবা।
সাংবাদিকরা গাড়ির কাছে এলে তার পিতা চিৎকার করে বলেন, আমার গাড়ি থেকে দূরে থাকো! কিছুক্ষণ পর তারা দ্রুত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। এর আগে এ বছর, যে ছেলেটির বয়স তখন ১৩ ছিল (এবং ক্যারনের বয়স ছিল ২৮), তখন সে ডেইলি মেইল’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করে, আসলে সেও ক্যারনের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল প্রথমে। এখন ২০ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষার্থী সে। দাবি করেছে, সে কোনো ভিকটিম নয়; বরং এখনো ক্যারনকে ভালোবাসে এবং একসময় তার সঙ্গে সংসার করতে চায়। সে বলে, ওরা সব অভিযোগ তুলে নিক।
আমি কখনো গ্রুমড হইনি, রেপড হইনি, বা ম্যানিপুলেটেড হইনি। তিনিই কোনো কিছু শুরু করেননি। সবকিছু আমি শুরু করেছি। তবে প্রসিকিউশন বলছে, তখন ছেলেটির বয়স ছিল ১৩, অথচ নিউ জার্সিতে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার সম্মতির বয়স ১৬ বছর। ফলে বিষয়টি আইনের চোখে শিশু যৌন নির্যাতন। ক্যারনের সঙ্গে ছেলেটির পরিচয় হয় যখন তিনি তার বড় বোনকে পড়াতেন। ছেলেটির পরিবার ক্যারনের ওপর এতটাই আস্থা রাখতো যে, তাকে নিজেদের বাড়িতে রাত কাটাতে দিতো। কিন্তু পরবর্তীতে ক্যারন গর্ভবতী হন এবং ২০১৯ সালে সন্তানের জন্ম দেন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ছেলেটির পিতা একটি ছবিতে শিশুটিকে দেখে হতবাক হন। কারণ শিশুটির চেহারা তার ছেলের সঙ্গে বেশ মিল। তখনই তিনি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানুয়ারি মাসে ক্যারনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন প্রতিভাবান এক তরুণ ক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠা ছেলেটি নিজের পিতার প্রতি ক্ষুব্ধ। সে বলছে, সবকিছুর শুরু হয়েছিল ফেসবুকে আমার পিতার এক পোস্ট দিয়ে। আমি চাইনি তাকে (ক্যারনকে) এভাবে হেয় করা হোক। সে আরও বলেছে, মানুষ জানে না তিনি আমার পরিবারের জন্য কী করেছেন। আমি তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসি। তিনি সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। ক্যারনের পরবর্তী আদালতের হাজিরা আগামী মাসে নির্ধারিত হয়েছে।