বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনে না গেলে ড. ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
টক শোতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আওয়ামী লীগ যেমন ১৮ এবং ৭৩ একতরফা নির্বাচন করে নিয়ে গেছে এবং সেটা আনফেয়ারলি করেছে। এবারের নির্বাচনও ফেয়ার, সুষ্ঠু তবে একতরফা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
কারণ, বিএনপির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তাকে সিরিয়াসলি প্রতিটা আসনে কমপিট করার মতো কোনো প্রার্থী নাই। সেখানে সব দল যদি একত্রিত হয়ে যায়, তারপরও বিএনপির অ্যাগেনইস্টে ১০০ প্রার্থী দেওয়াও সিরিয়াসলি কঠিন হবে।
তিনি বলেন, তবে বিএনপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বিএনপি নিজেই। ১৩০-১৩৫ আসনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আছে এবং তারা একে অপরের বিরুদ্ধে খুবই স্ট্রং।
ফুয়াদ আরো বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর ভিতরে সিরিয়াস ইস্যু তৈরি হয়েছে যে, আমরা এগুলোতে একমত হয়েছি, বাস্তবায়ন কীভাবে হবে? বাস্তবায়নের ব্যাপারে কমিশন যে প্রস্তাব করেছে এটা আসলে বিএনপির প্রস্তাব। আগামী সংসদ দুই বছরের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু আমরা অনেকেই এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নই।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, ইতিমধ্যে যেগুলোতে একমত হয়ে গেছি সেটার জন্য কেন ২০৩১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব? আমরা সবাই মিলে যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০ তে নেব, এটার জন্য আমি কেন ২০৩১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব।
এটা ২০২৬ এ কেন হবে না? আমরা যদি সবাই একমত হই যে, নারীদের ন্যূনতম ৫ শতাংশ সিটে সরাসরি নমিনেশন দেওয়ার চেষ্টা করব, সেটা ২০৩২ সালের জন্য অপেক্ষা করব কেন? আমরা যদি সবাই একমত হই যে, কেউ দুই টার্মের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। তাহলে সেটার জন্য অপেক্ষা করেব কেন। এটাতো এখনই দরকার।’
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে গেলেও নির্বাচনে বিএনপির একতরফা বিজয়ের সম্ভাবনা আছে। নির্বাচনটা একতরফাই হয়ে যাবে।
একমুখী হয়ে যাবে।’
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, এরপর টেনশনের জায়গাগুলো হচ্ছে- জামায়াত এবং চরমোনাই হচ্ছে বিএনপির পরে সবচেয়ে বড় দুইটা দল। তারা যদি পিআরের বিষয়ে খুবই স্ট্রংলি থাকে যে, আমরা সংসদে পিআর চাই। উচ্চকক্ষ না হলে এখন যেভাবে আছে সেই সংসদেই পিআর হবে এবং তারা যদি এই ইস্যুতে নির্বাচন বয়কট করে; এনসিপি নিম্নকক্ষে পিআর চায় নাই, তারা যদি সংস্কার এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির ব্যাপারে এডামেন্ট থাকে; তাহলে আলটিমেটলি যেটা হবে সেটা একতরফার দিকে চলে যাবে। তখন সরকারের সামনে এবং বিএনপির সামনে অপশন থাকবে যে, বিএনপি এখন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা যাদের আসন দেওয়া নেওয়া করছে তারা বিরোধীদলে চলে যাবে। এরকম একটা অপশন হবে। কিন্তু সেটা আদৌ দেশের জন্য, বিএনপির জন্য সম্মানজনক হবে কিনা?
ফুয়াদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এই দায় নিয়ে একটা ভালো নির্বাচন করবে কিনা? গণঅভ্যুত্থানের সকল শক্তি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ যেহেতু করছে না, এরকম একটা নির্বাচনের দায় আমরা আসলে নেব না। তখন এমনও হতে পারে, প্রফেসর ইউনূস কিন্তু বেশ কয়েকবার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন হয়তো তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন। নির্বাচনকালীন একটা সরকার করে দিয়ে তিনি বিদায় নিয়ে চলে যাবেন।