গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, ‘শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে’। বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ড. ইউনূসের নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার প্রশংসা করলেও, এবার যথারীতি একহাত নিয়েছেন তার।
সমালোচনা করেছেন ড. ইউনূসের ‘মিষ্টি কথার’। প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের মিষ্টি কথায় গদগদ হয়ে পড়ার সুযোগ কতটুকু আছে?’
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ প্রশ্ন তোলেন রাশেদ খান।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার ও সংস্কারের কথা শুনলে খুশিতে আত্মাহারা হয়ে পড়ি! এই বুঝি হাসিনাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হয়ে গেলো!’
এরপরই সংস্কার ইস্যুতে ড. ইউনূস সরকারকে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করে রাশেদ খান বলেন, ‘আমরা মনে করি সরকার সংস্কারের মাধ্যমে সব ঠিকঠাক করে ফেলবে! কিন্তু কথায় আছে না- ‘সময় গেলে সাধন হবে না’! ঠিক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের ক্ষেত্রে সেটিই হয়েছে।’
ড. ইউনূস সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারেননি দাবি করে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘এর অন্যতম কারণ হলো তার ভুল টিম সিলেকশন। (সমালোচনার পরেও তিনি এই উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের উদ্যোগও নেননি!)’
উপদেষ্টা পরিষদকে ‘ইন্টার্ন’ আখ্যা দিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘তিনি (ড. ইউনূস) ফ্রান্স থেকে ফিরে এসে যাদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন তারা ইন্টার্ন চিকিৎসকের মত। উনাদের মাধ্যমে তিনি ১৬ বছর ধরে তৈরি হওয়ার হাসিনার ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার (ক্যান্সার) চিকিৎসা করাতে চান! ইন্টার্ন উপদেষ্টাদের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সার্জারি করাতে গিয়ে তিনি রাষ্ট্রের পুরো অঙ্গে ক্যান্সারের মত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ছড়িয়ে ফেলেছেন বা বহাল রেখেছেন। যারা ফলাফল; সচিবালয়ে, পুলিশে, র্যাবে, বিজিবিতে, সব দপ্তর ও সেক্টরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সেটাপ বহাল তো রয়েছেই বরং অনেকাংশে শক্তিশালীও হয়েছে।
এই ছাত্রনেতার মতে, ‘গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী সুবিধাভোগীদের, যারা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ফ্যাসিবাদী কাঠামো সৃষ্টির দায়িত্ব পালন করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করা, শাস্তির মুখোমুখি করা। কিন্তু ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যার সেই আগের আওয়ামী সেটাপেই দেশ চালাচ্ছেন। সুতরাং বিচার ও সংস্কারের মিষ্টি কথা যে তারা বলেন, সেটি আমার কাছে অবিশ্বাস লাগে। উপদেষ্টা পরিষদের এনজিও সার্কেলটা মিষ্টি কথায় পটু, কিন্তু বাস্তবায়নে তারা কার্যত উদাসীন ও অনভিজ্ঞ! যে কারণে বছর শেষেও মিষ্টি কথার মিষ্টি ধোঁকায় আমরা নতুন স্বপ্ন দেখছি! মূলত আমাদের ভাগ্যই খারাপ। বারবার পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে আমাদের যোদ্ধারা জীবন দেয়, তবুও রাষ্ট্রের গুণগত ও পদ্ধতিগত পরিবর্তন হয়না!’