প্রচণ্ড বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ভারতশাসিত কাশ্মিরের হিমালয় অঞ্চলের এক পাহাড়ি গ্রামে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় শীর্ষ একজন সরকারি কর্মকর্তা। খবর আল-আরাবিয়ার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি এ মাসে ভারতে ঘটা প্রাণঘাতী বন্যায় সৃষ্ট বিপর্যয়গুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তর ঘটনা। কিশতোয়ার জেলায় প্রবল বর্ষণের কারণে ‘ক্লাউডবার্স্ট’ (হঠাৎ প্রচণ্ড বৃষ্টি) হয়েছে জানিয়ে কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘খবরটি ভয়াবহ।
ঘটনার পর কিশতোয়ারের একটি হাসপাতালে ভিড় জমে যায়। অনেককে আহতদের স্ট্রেচারে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। জেলার প্রশাসক পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেছেন, ‘আমরা ৩৪টি মৃতদেহ ও ৩৫ জন আহতকে উদ্ধার করেছি। আরো মৃতদেহ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাশের অথোলি গ্রামের বাসিন্দা সুশীল কুমার বলেন, ‘আমি নিজ চোখে অন্তত ১৫টি মৃতদেহ স্থানীয় হাসপাতালে আনতে দেখেছি।’
টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকারী দলগুলোর সেখানে পৌঁছাতে অসুবিধা হতে পারে। প্রধান শহর শ্রীনগর থেকে এলাকাটি সড়কপথে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘যাদের সাহায্যের প্রয়োজন, তাদের সম্ভাব্য সব সহায়তা দেওয়া হবে।
এর আগে ৫ আগস্টের বন্যায় ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হিমালয় শহর ধরালি ভেসে যায় ও কাদায় চাপা পড়ে। ওই দুর্যোগে অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত নয়।
ভারতে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকালে বন্যা ও ভূমিধস সাধারণ ঘটনা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অপরিকল্পিত উন্নয়ন মিলিয়ে এসব দুর্যোগের ঘনত্ব ও তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা গত বছর সতর্ক করে বলেছিল, ‘ক্রমবর্ধমান তীব্র বন্যা ও খরার ঘটনা হচ্ছে এক ধরনের সতর্ক সংকেত—যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর পানিচক্র আরো অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।