Thursday, August 7, 2025

ছাত্রশিবিরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়াসহ ৫ দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

আরও পড়ুন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চিহ্নিত ‘গণহত্যাকারীদের’ ছবি প্রদর্শনের জন্য ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

বুধবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

এতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মচারীদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে চিহ্নিত অপরাধীদের ছবি দিয়ে জুলাই উদযাপন করা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। আমরা জানি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষপাতদুষ্টতা রয়েছে এবং প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং শাস্তি নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে যা বিতর্কের ঊর্ধ্বে, তা হলো এই যুদ্ধাপরাধীদের একাত্তরের গণহত্যার দায়। কারণ, বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হলেই অপরাধের দায় থেকে মুক্ত হওয়া যায় না।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এ রকম একটি ঘটনা ৫ আগস্টের মতো দিনেই ঘটাতে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিজের অদক্ষতা ও অক্ষমতা আরেকবার প্রমাণ করলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব যেমন প্রশাসনের একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের সম্মান রক্ষা করাও তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে তারা আবারও ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা গত বছরের আগস্ট থেকেই দেখছি যে, ক্যাম্পাসের ভেতরে তোফাজ্জল ও সাম্য হত্যাকাণ্ড, শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা, চারুকলার ভেতরে ঢুকে শোভাযাত্রার মোটিফে আগুন দেওয়া, একাধিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আমলে না নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের প্রতি।’

আরও পড়ুনঃ  খুনিদের বিচার করতে ড. ইউনূসকে সরকারে বসানো হয়েছে: ফারুক

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘যারা চব্বিশের নাম দিয়ে একাত্তরকে অবমূল্যায়নের চেষ্টা করে, তারা আসলে চব্বিশের শহীদদের আত্মত্যাগকেও ছোট করে ফেলে। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে বিতর্কিত করে তাকে ৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর এক ঘৃণ্য অপচেষ্টা শুরু করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। এর আগে তারা মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করে বিতর্কিত লেখা ছেপেছিল তাদের নিজস্ব প্রকাশনায়। ব্যাপক বিতর্কের মুখে তারা তা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। আবারও একই লক্ষে তারা যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শন করেছে বলে আমরা মনে করি। এই ছবিগুলো একাত্তরের লাখো শহীদের রক্তের প্রতি এবং আমাদের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের প্রতি চূড়ান্ত অসম্মান, যা আমরা কোনোভাবেই বরদাশত করবো না।’

আরও পড়ুনঃ  ফে*র বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি*তে কত

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের ৫ দাবি

১। ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে তারা কখনই যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে না।

২। এই ঘটনার জন্য চেয়ে প্রশাসনকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের রক্তে রঞ্জিত এই ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি স্পষ্ট প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করতে হবে।

৩। এই ঘটনাটিসহ গত এক বছরে সংঘটিত একাধিক শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত ঘটনায় দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া প্রক্টরকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  আজ থেকে রাজপথে থাকবেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা

৪। ইন্টারনেট ব্যবহার করে নারীদের হয়রানি রোধ করতে যেসব সংগঠন বা গ্রুপ ও গ্রুপের সদস্য এ সব কাজে সক্রিয়, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে এবং ছড়িয়ে দিতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে স্মৃতি-চিরন্তনসহ যে-সব স্থাপনা ও নিদর্শন মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের তালিকা ধারণ করে, সেসবের যথাযথ সুরক্ষা ও সংরক্ষণ করতে হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ