Thursday, April 10, 2025

‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’র এক মাসেও স্বস্তি ফেরেনি, ক্ষমতাচ্যুতরাই কি টার্গেট

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অব্যাহত অবনতির মুখে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের সেনা-পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছিল এক মাস আগে। আজ শনিবার যখন এই অভিযানের এক মাস পুরো হচ্ছে, তখন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য কতটুকু পূরণ হয়েছে, তা নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

জেলায় জেলায় অভিযান চলানোর পরও দেশের আইনশৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি বলে জানাচ্ছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

বরং অভিযান চলার মধ্যেই একের পর এক ডাকাতি, প্রকাশ্যে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই, গণপিটুনি দিয়ে হত্যা, ধর্ষণ, ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাধা, মব সৃষ্টি করে বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট, এমনকি পুলিশের ওপর হামলার মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  ‘তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তির ভিডিও দেখাতে পারলে জুতার মালা পরে ঘুরব’

এর মধ্যেই আবার ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া অঞ্চলে চরমপন্থিদের তৎপরতা বাড়তে শুরু করেছে।

“এসব ঘটনায় কমে আসার পরিবর্তে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-আতঙ্ক অনেকক্ষেত্রে আরও বেড়েছে বলেই আমরা জানতে পারছি,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান।

সার্বিক বিবেচনায় প্রথম মাসে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আশানুরূপ সফলতা দেখা যায়নি বলে মনে করছেন মানাবাধিকার কর্মীদের অনেকে।

“সার্বিক মূল্যায়নে অভিযানটিকে এখন পর্যন্ত খুব একটা সফল বলা যাচ্ছে না। সফলতা যেভাবে আশা করা হয়েছিল, সেভাবে হচ্ছে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মানবাধিকারকর্মী নূর খান।

আরও পড়ুনঃ  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি থেকে পদত্যাগের নতুন জোয়ার

এদিকে, অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বড় অংশই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে জানা যাচ্ছে, যা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে।

তবে সরকার বলছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

“অন্যায়ভাবে কাউকে ধরা হয়নি। যার নামে মামলা আছে, তাকে তো অবশ্যই ধরতে হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন অর্ন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

তিনি আরো বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) যে ষড়যন্ত্র করছে, এটা তো স্পষ্ট। তারা ডেভিল অ্যাক্টিভিজম করছে বলেই তো ডেভিল হান্টের প্রয়োজন পড়লো।”

আরও পড়ুনঃ  গভীর রাতে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের ফেসবুক স্ট্যাটাস

উল্লেখ্য যে, গত সাতই ফেব্রুয়ারি রাতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

ওই ঘটনায় গুরুতর আহত একজন পরে মারাও যান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই ওই হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগিরা।

এ ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের দাবির মুখে আটই ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী শুরু হয় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’।

বিশেষ এই অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার ১১ হাজারের বেশি। একই সময়ে নতুন-পুরাতন বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়েছে অন্তত ২০ হাজার।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ