Tuesday, October 14, 2025

৫ দিন পুলিশের হেফাজতে পুলিশের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, বিক্ষোভে উত্তাল জনতা

আরও পড়ুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে চোর সন্দেহে আটক এক যুবক পুলিশের হেফাজতে পাঁচ দিন অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন। নিহত আব্দুল্লাহ (২৩) উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, আজ সকাল থেকে স্থানীয়রা সলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্প ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার চুরির সন্দেহে আব্দুল্লাহকে সলিমগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে আটক করে গণপিটুনির পর সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে না রেখে ক্যাম্পেই গোপনে পাঁচদিন আটকে রেখে পিটিয়ে ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন এসআই মহিউদ্দিন ও এসআই মোবারক।

আরও পড়ুনঃ  ভারী বৃষ্টিতে নদী উপচে পড়ছে পানি, সড়কে ঘুরছে বিশাল কুমির

গতকাল (রোববার) বিকেল ৪টার দিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় “পানি দাও পানি দাও” বলতে বলতে তিনি ক্যাম্পেই লুটিয়ে পড়েন। পরে অলিউর রহমান জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দ্রুত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রেফার করেন, কিন্তু পথে আব্দুল্লাহর মৃত্যু হয়।

নিহতের ছোট ভাই সাকিল মিয়া নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এতে সলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. মহিউদ্দিন, স্থানীয় তবির মিয়া, আলামিনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  'শেখ হাসিনা চাইলে এই দুর্বলতাকে ব্যবহার করে দেশে ফিরতে পারেন'

মামলার এজাহারে বলা হয়, “আসামিরা পরিকল্পিতভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে আব্দুল্লাহকে হত্যা করেন।” পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওসি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অনুমতি ছাড়াই তাকে ক্যাম্পে গোপনে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। অভিযানের নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হলেও আব্দুল্লাহকে আদালতে না তুলে গোপন রাখে পুলিশ।

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকালে স্থানীয় জনতা সলিমগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্প ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পের সকল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  নামাজ পড়তে গেলে বলা হতো জঙ্গী অথবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক আছে

বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযুক্ত ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই মো. মহিউদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ দুপুরে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নবীনগরের এই ঘটনাটি আবারও পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন সামনে এনেছে। তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী এবং মানবাধিকার কর্মীরা। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও দায়সারা মনোভাব নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

জনপ্রিয় সংবাদ