Tuesday, April 8, 2025

‘আগামী ১০ বছরের মধ্যে আ.লীগের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই’

আরও পড়ুন

আগামী ১০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।

রোববার (০৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে চ্যানেল আইয়ে ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রাজনীতিতে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের ফিরে আসা নিয়ে মতিউর রহমান বলেন, জুলাই-আগস্টে মানুষের যে ক্ষোভ দেখেছি, এটা আমরা অতীতে জানতাম। কিন্তু, এটা প্রকাশ্যে এমনভাবে আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়নি। মানুষের মধ্যে যে ঘৃণার উদ্রেক হয়েছে, অনাস্থা তৈরি হয়েছে সেখানে আগামী দিনে ফিরে এসে নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম দেখা যায়। আমি মনে করি, আগামী ১০ বছরের মধ্যে তাদের ফিরে আসা, দল পুনর্গঠন ও দল পরিচালনা করা এবং নির্বাচন বা গণআন্দোলনের মধ্যেদিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না।

আরও পড়ুনঃ  চাকরিতে বেশি বেতন নয়, কাজকে উপভোগ করা দরকার

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা দেখতে পেয়েছি, স্বৈরতান্ত্রিক সরকার পতনের পর তারা আবার ফিরে এসেছে। এমনকি বিদেশে পলায়নের পরও ফিরে এসেছে, ফিলিপিনের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি সেটা। হাইতি বা দুয়েকটা দেশের কথা শুনেছি, তারা ফিরে এসেছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এবং তার দলের একটা বড় অংশ যারা মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছিলেন তারাও পালিয়ে গেছেন। দেশের ভেতরে যারা আছেন তাদের বড় অংশ জেলে বা লুকিয়ে আছেন। বর্তমান সরকার তাদের বিচার করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। বিচার হবে, বিচারে জন্য হয়ত আমাদের কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত তিন মাসেও নানা রকম অস্থিরতা, ভয় ও দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। নানা রকম চাপের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। অতীতে দেখেছি কিছু আইনকানুন বা ব্যবস্থা সরকার নিয়েছিল বা নেওয়ার পথে ছিল। আমরা অবশ্য সেই আইন বাতিল দাবি করব। বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-এটা বাতিল করার দাবি ছিল। এই আইনে অনেক মামলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এখনো একটা মামলা চলমান। এই আইনগুলো বাতিল করা অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুনঃ  মসজিদে ঢুকে মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে জখম

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ-ভারত পাশাপাশি দুটি দেশ। একটা বৃহৎ দেশ, তার পাশে আমরা ছোট একটা দেশ। ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের গুরুত্ব গত এক-দুই দশকে অনেক বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমরা চাই, অর্থাৎ বিগত কোনো সরকার এটা অস্বীকার করতে পারেনি যে-দুটো দেশের মধ্যে একটা স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত। কারণ আমাদের অবশ্যই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা রয়েছে।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা, আসা-যাওয়া, শিল্পকারখানা, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানা ক্ষেত্রে সম্পর্ক অব্যাহত থাকুক এটা আমরা চেয়েছি। তবে আমরা চাইলেও দুই দেশের সরকারের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবে অগ্রসর হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  মাকে বাঁচাতে গিয়ে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে মা-ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যু

তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে মতিউর রহমান বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি, বিগত সময়গুলোতে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের কথা বলা হলেও তিস্তা নদীর পানি কিন্তু আমরা পাইনি। এমনকি গঙ্গা নদীর পানি নিয়েও আমাদের আলোচনা শেষ হয়নি। আরও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। দুই দেশের যৌথ নদীর পানিবণ্টন বিষয়য়ক যে বিষয়গুলো আছে, সেখানেও সমস্যা রয়েছে এবং এটা পূর্ণতা হয়নি।

এ সময় মতিউর রহমান আরও বলেন, বিগত স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ভারত স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। আমাদের সবার এটা জানা। বিগত সময়ে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যেখানে ভারত খুবই নিশ্চিন্তবোধ করেছে। তারা মনে করেছে এটা তাদের জন্য একটা ভালো এবং স্থায়ী ব্যবস্থা। এটার জন্য তারা বিগত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছিল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ