Tuesday, June 10, 2025

ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যিনি ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে প্রতিশ্রুতিবব্ধ

আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিহা সিনওয়ার গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলা নিয়ে মোটেও অনুতপ্ত নয়। তার সঙ্গে যাদের যোগাযোগ রয়েছে তারা বলেছেন, ওই হামলার প্রেক্ষিতে গাজায় পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। হত্যা করেছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে। হামলা থেকে বাদ যায়নি তাদের মিত্র বাহিনী হিজবুল্লাহও।

৬২ বছর বয়সী সিনওয়ার ছিলেন ইসরায়েল সীমান্তে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। ওই হামলা ছিল ইসরায়েলের ইতিহাসে এক ভয়ানক দিন। মধ্যপ্রাচ্য সরকারের দূটি সূত্র এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের চারজন কর্মকর্তা বলেছেন, ফিলিস্তিনি জাতি গঠনে সশস্ত্র হামলা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বেশি ইহুদি নিহতের ঘটনা ঘটেছে গত বছরের ৭ অক্টোবর। ওইদিন ১২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস।

আরও পড়ুনঃ  ইরানে কি পরমাণু হামলা করতে যাচ্ছে ইসরায়েল?

এ ঘটনার পর পাল্টা প্রতিশোধ নিতে গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় এ পর্যন্ত ৪১ হাজার ৬০০ জন নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৯ লাখ মানুষ। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনের পাশাপাশি নতুন করে লেবাননেও সংঘাত শুরু হয়েছে। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধ ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহর শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক নেতা নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় হামাসকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া তেহেরানের সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

ইসলামী গোষ্ঠী নিয়ে গবেষণা করা গবেষক ও লেখক হাসান হাসান বলেন, হামাসের নতুন নেতা সিনওয়ার এখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতিবিদ্রোহী এবং ইরাকের মিলিশিয়াকে নিয়ে হামলায় জাড়িয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  তিন দেশ থেকে ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট-ড্রোন হামলা

হাসান বলেন, ৭ অক্টোবর যে উদ্দেশ্য নিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়েছিল তার কিছুই অর্জিত হয়নি। বরং ওই হামলার তারা এখন খেসারত দিচ্ছেন।

এই গবেষক আরও বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর সঙ্গে যা করেছে গত এক বছর ধরে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে করা ঘটনার সমান। কারণ হিজবুল্লাহর তিন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের সামরিক স্থাপনায় হামলা করা হয়েছে এবং হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান হাসরুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে।

কেকে ক্যানসারের উপাদান, কর্ণাটকে সতর্কতা জারি
অন্যদিকে গাজাবাসীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা থাকলেও সিনওয়ার হামাসের ওপর তার কর্তৃত্ব ধরে রেখেছেন। গত জুলায়ে তেহেরানে ইসরায়েলি গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে নিহত হওয়ার পর সিনওয়ারকে হামাসের নতুন নেতা নির্বাচিত করা হয়। তবে ইসরায়েল ইসমাইল হানিয়ার ওপর হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

আরও পড়ুনঃ  ২৩৮ বার নির্বাচনে হেরেও ফের প্রার্থী হচ্ছেন!

হামাসের এই নতুন নেতাকে ধরতে মরিয়া ইসরায়েল। তেল আবিবের দুটি সূত্র জানিয়েছে, গাজায় থাকা হামাসের রহস্যজনক সুঁড়ঙ্গ থেকে সিনওয়ার এবং তার ভাই (যিনি একজন শীর্ষ কমান্ডার) কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বিমান হামলা থেকে তারা বেঁচে গেছেন। তবে ওই হামলায় হামাসের ডেপুটি প্রধান মোহাম্মাদ দাইফ এবং আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিহত হয়।

হামাসের এই নেতাকে ইসরায়েল ‘শয়তানের মুখ’ ‍হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ গত ৭ অক্টোবর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি এবং সে খুবই গোপণীয়তার সঙ্গে চলাফেলা করেন। এছাড়া যোগাযোগের ক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করেন না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ