Wednesday, June 11, 2025

বিক্ষোভে উত্তাল কেনিয়ার সংসদ ভবনে আগুন, গুলিতে নিহত অন্তত ১০

আরও পড়ুন

কর বৃদ্ধি করে সংসদে পাস হওয়া নতুন একটি আর্থিক বিলের বিরুদ্ধে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবনে বিক্ষোভকারীদের ঢোকার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ঘের ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ছোড়া গুলিতে অন্তত ১০ বিক্ষোভকারী নিহত ও আরও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষের সময় কেনিয়ার সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

দেশটির সংসদে কর বৃদ্ধি করে পাস করা নতুন আর্থিক আইনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার নাইরোবিতে ওই বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, নাইরোবিতে সংসদ ভবনের কাছে ১০ বিক্ষোভকারীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ। আর এএফপির প্রতিনিধিরা সেখানে অন্তত তিনজনকে অবচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নতুন দাবি পিটিআইয়ের

গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ-সমাবেশ দেশটির সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো গত সপ্তাহের শেষের দিকে বলেছিলেন, তিনি বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত।

কিন্তু মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে নাইরোবিতে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হাজার হাজার মানুষ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের পাশাপাশি ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেসময় আইনপ্রণেতারা কর বৃদ্ধির প্রস্তাবের একটি বিতর্ক করছিলেন। সংসদ অধিবেশন চলাকালীন বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ সংসদ ভবনের বাইরে জনতার ওপর গুলি চালায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় কেনিয়ার মানবাধিকার কমিশন (কেএইচআরসি) বলেছে, ‘‘পুলিশ চারজন বিক্ষোভকারীকে গুলি করেছে এবং একজনকে হত্যা করেছে।’’

নাইরোবির একজন প্যারামেডিক রয়টার্সকে বলেছেন, পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সংসদ ভবনের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। যে কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ইরানের পর সিরিয়া ও ইরাকে সিরিজ বিস্ফোরণ

রিচার্ড এনগুমো নামের আরেকজন প্যারামেডিক বলেছেন, পুলিশের গুলিতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি সংসদের বাইরে আহত দুজন বিক্ষোভকারীকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টাকারী বিক্ষোভকারী ডেভিস তাফারি রয়টার্সকে বলেন, ‌‌‘‘আমরা সংসদ বন্ধ করে দিতে চাই। প্রত্যেক এমপিকে পদত্যাগ করতে হবে। আমাদের একটি নতুন সরকার হবে।’’

নাইরোবির ছাড়াও দেশটির আরও কয়েকটি শহরে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েক দিন আগে দেশটির সংসদে নতুন একটি অর্থ বিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে আইনটি স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। এই আইনে কোনও আপত্তি থাকলে প্রেসিডেন্ট তা সংসদে ফেরত পাঠাবেন।

আরও পড়ুনঃ  মক্কা-মদি*নায় রেড অ্যালার্ট জারি

কিন্তু ইতোমধ্যে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটে জর্জরিত দেশটির নাগরিক নতুন এই কর বৃদ্ধি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। বিক্ষোভকারীরা দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কেনিয়ার নির্বাহী পরিচালক ইরুঙ্গু হাউটন এএফপিকে বলেছেন, মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা বর্তমানে রাজধানী নাইরোবির ন্যাশনাল পুলিশ সার্ভিসের তাজা বুলেটের ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের রিপোর্ট করেছেন। বহুসংখ্যক মানুষ আহত হওয়ায় তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল অফিসারদের নিরাপদে সেখানে পৌঁছানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

পূর্ব আফ্রিকার সবচেয়ে উন্নয়নশীল অর্থনীতির একটি দেশ কেনিয়া। দেশটির ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশই দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ