সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য গঠিত হয়েছে জাতীয় বেতন কমিশন। কমিশন ন্যায়সংগত ও টেকসই সুপারিশ তৈরির জন্য সবার মতামত নিচ্ছে। বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে সংশ্লিষ্টরা কমিশনের ওয়েবসাইট (paycommission2025.gov.bd) থেকে ৩২টি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন।
মতামতের মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত হচ্ছে ১১ নম্বর প্রশ্ন: ‘প্রস্তাবিত পে স্কেলে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল বেতনের অনুপাত কী হওয়া উচিত?’। এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে রাখা হয়েছে চারটি অপশন: ১:৮, ১:১০, ১:১২ ও অন্যান্য। অর্থাৎ সর্বনিম্ন ২০তম গ্রেডের একজন সরকারি কর্মচারীর বেতন যদি এক টাকা ধরা হয়, তবে সর্বোচ্চ গ্রেডের বেতন হবে ৮, ১০ বা ১২ টাকা।
উদাহরণস্বরূপ, ১০০ টাকা বেতন ধরে ১:৮ অনুপাতে সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন ১০০ হলে সর্বোচ্চ হবে ৮০০ টাকা। একইভাবে ১:১০ অনুপাতে ১০০০ টাকা এবং ১:১২ অনুপাতে ১২০০ টাকা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে নিচের গ্রেডের কর্মচারীরা বেতন অনুপাত কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। তারা বলছেন, যদি সর্বনিম্ন বেতন ১৬ হাজার টাকা ধরা হয়, তবে:
১:৮ অনুপাতে সর্বোচ্চ বেতন হবে ১ লাখ ২৮ হাজার
১:১০ অনুপাতে সর্বোচ্চ বেতন হবে ১ লাখ ৬০ হাজার
১:১২ অনুপাতে সর্বোচ্চ বেতন হবে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা
কিছু কর্মচারী ‘অন্যান্য অপশন’ বেছে নিলে ১:৪ থেকে ১:১৫ পর্যন্ত অনুপাতের দাবি আসতে পারে। তবে গড়ে অনুপাত দাঁড়াবে ১:৮ বা ১:১০-এ। এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন গ্রেডের বেসিক ১৬ হাজারসহ মোট ২৫ হাজার এবং সর্বোচ্চ গ্রেডের বেসিক দেড় লাখ হলেও বেতন বৈষম্য থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০তম গ্রেডের এক কর্মচারী বলেন, “উচ্চগ্রেডের কর্মকর্তাদের ব্যয় বেড়েছে, আমাদেরও বেড়েছে। ১:৮ অনুপাতে বেতন বৃদ্ধি হলেও টাকার পার্থক্য অনেক হবে, অর্থনৈতিক সংকট কমবে না বরং বাড়বে।”
বর্তমানে সর্বোচ্চ পদ (গ্রেড-১) ও সর্বনিম্ন পদ (গ্রেড-২০)-এর বেতনের অনুপাত প্রায় ১০:১। নতুন কাঠামোতেও এই অনুপাত ৮:১ থেকে ১০:১ সীমার মধ্যে রাখার প্রস্তাব করছে কমিশন। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশে এই ধরনের অনুপাত বিদ্যমান রয়েছে।
জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫-এর সুপারিশ অনুযায়ী, নতুন পে স্কেল ২০২৬ সালের শুরু থেকে কার্যকর হতে পারে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটেই প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হবে।