বর্তমান সময়ে প্রায় সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। এ কারণে খাদ্যতালিকায় কী রাখবেন, কোনটি খাবেন, কোনটি কখন খাওয়া যাবে না―সবদিকে খেয়াল রাখেন তারা। পাশাপাশি অনেকেই নিজেকে ফিট রাখার জন্য খাবার পরিমাণে কমিয়ে ফেলাসহ কেউ কেউ রাতে খাবার খাওয়াও বন্ধ করেন। তাদের বিশ্বাস, রাতে খাবার খাওয়া বন্ধ করলে ওজন কমবে।
আধুনিক এই যুগে সময় স্বল্পতার কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যেই সবাই নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করেন। এ কারণেই রাতে অনেকে খাবার খাওয়া বন্ধ রাখেন। স্বাস্থ্য কমাতে নানা উপায়ের মধ্যে খাবার খাওয়া বন্ধ রাখা নিয়ে কেউ পক্ষে কথা বলেন, কেউ আবার এটি ভালো নয় বলেও জানান। এ নিয়ে চ্যানেল 24 অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানী ঢাকার লাইফ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার অ্যান্ড বিডিএন পল্লবী ডায়াবেটিস সেন্টারের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান ডরিন। তার পরামর্শ, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা বিপাককে ধীর করে দেয়, ফলে চর্বি জমতে থাকে। তাহলে এ পুষ্টিবিদের পরামর্শ জেনে নেয়া যাক-
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার নেতিবাচক দিকগুলো:
রাতে খাবার খাওয়া বন্ধ রাখার অর্থ পরদিন সকালে নাশতা করা। এ কারণে সন্ধ্যার নাশতা থেকে পরদিন সকালের নাশতা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা হয়। ফলে শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়, সকাল বেলা ক্লান্তি বোধ হয়, মাথাব্যথা বা মনোযোগের অভাব হয় এবং কাজের উৎসাহ কমে যায়। আবার গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা তো রয়েছেই। দীর্ঘ সময় পাকস্থলীতে কিছু না পড়ার কারণে গ্যাস জমে অ্যাসিডিটি বা আলসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
রাতের খাবারে কী খাওয়া উচিত:
শরীর হচ্ছে একটি ইঞ্জিন, যা জ্বালানি ছাড়া চলা অসম্ভব! এ ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার শরীরের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে―রাতের খাবারে কী খাওয়া উচিত? এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহানের পরামর্শ হচ্ছে, রাতে ১ বা ২টি রুটি, যা সবজি বা স্যালাদ দিয়ে খেতে হবে। সম্ভব হলে ডিম, মুরগি, মাছ, টক দই রাখতে পারেন, তবে তা পরিমিত পরিমাণ। আর হ্যাঁ, ভাজাভুজি ও অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, রাত ৯টার পর খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
ওজন কমানোর সঠিক পথ:
স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাতে খাবার খাওয়া বন্ধ বা বাদ দিলে হবে না। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, সারাদিনে কতবার খাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন এবং কী পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম করছেন। এসব ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং সুস্থ থাকতে শারীরিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই।
পরামর্শ:
সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য একজন পুষ্টিবিদের সাহায্যে ডায়েট প্ল্যান করে নেয়া যেতে পারে। সবসময় মনে রাখতে হবে- রাতের খাবার একেবারে বাদ নয়, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার বেছে নিতে হবে। সময়মত খাবার খেতে হবে, বেশি না খেয়ে পরিমাণমত খেতে হবে। খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন রাখতে হবে এবং নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও হালকা শরীরচর্চা করতে হবে।