ফ্যাসিস্ট হাসিনা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেশজুড়ে নারকীয় হত্যযজ্ঞ চালিয়ে চোরের মত লেজ গুটিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পতিত এই স্বৈরাচার পালানোর পর বিভিন্ন সময় তার হত্যাযজ্ঞের নির্দেশ দেওয়ার নানা রকমের কল রেকর্ড ফাঁস হয়। এবার নতুন করে ফাঁস হয়েছে আরও একটি কল রেকর্ড। যেখানে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেখা যায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ফ্যাসিস্ট হাসানুল হক ইনুর সাথে কথা বলতে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচার কার্যক্রমে যে কল রেকর্ড তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে আন্দোলনকারীদের দমনে নেওয়া কঠোর ও ভয়াবহ পদক্ষেপের নির্দেশনা শোনা গেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার মুখে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। জবানবন্দির সময় তিনি ট্রাইব্যুনালে পাঁচটি অডিও ক্লিপ জমা দেন, যার মধ্যে চারটি অডিও ক্লিপ শোনানো হয়। এই অডিওগুলোর দুটি ছিল শেখ হাসিনা ও ইনুর মধ্যে ফোনালাপের।
অডিওর এক পর্যায়ে ইনু শেখ হাসিনাকে বলেন: “আমি মনে করি যে আপনার পদক্ষেপটা সঠিকই হয়েছে। এখন পর্যন্ত যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাচ্ছি আর কি। খালি ঢাকাতে আপনার রামপুরার দিকে এবং শনির আখড়াতে…” জবাবে শেখ হাসিনা জানান: “না, রামপুরা ক্লিয়ার। শনির আখড়ায় একটু ঝামেলা এখনো আছে।
” পরবর্তী অংশে ইনু বলেন: “শনির আখড়ায় কিছু মোল্লারাই…” তখন হাসিনা বলেন: “খালি মোল্লা না, সেখানে অনেক মাদ্রাসা। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে বলেছি। নারায়ণগঞ্জে ঢুকতে দিচ্ছে না আর্মিকে। আমরা ছত্রীসেনা নামাচ্ছি।
এই কথোপকথনের আরও এক পর্যায়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বলতে শোনা যায়: “আমি বলছি, ক্যাজুয়ালটির দরকার নাই। ওরা ব্যারিকেড দিয়ে আছে তো, ঠিক আছে, আকাশ থেকে নামবে। কারণ, দুই পাশ দিয়ে ধরবে… ম্যাসেজটা দিয়ে দিতে পারেন।” পরিস্থিতি সামাল দিতে হেলিকপ্টার থেকে ‘সাউন্ড বোম্বিং’ বা আকাশপথে হামলার কথাও উঠে আসে কথোপকথনে। ইনুর জবাব ছিল: “আচ্ছা, ওপর দিয়ে সাউন্ড বোম যাবে আর কি।” শেখ হাসিনা তখন সংক্ষেপে বলেন: “হুম।” সাক্ষ্যদানকালে তানভীর হাসান আরও জানান, ২৩ ডিসেম্বর তিনি এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার) থেকে শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং তিনটি মোবাইল নম্বরের কল ডিটেইলস (সিডিআর) জব্দ করেন।
তার দাবি, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ ব্যবহারের নির্দেশ দেন এবং পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন, যাতে আন্দোলনকারীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে। এই অডিও ফাঁস এবং জবানবন্দি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারকার্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।