গাজীপুরে আলোচিত কিশোরী অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ নতুন মোড় নিয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে—এটি কোনো অপহরণ নয়, বরং প্রেমের টানে পালিয়ে যাওয়া দুই কিশোর-কিশোরীর প্রেমের গল্প।
পুলিশ জানায়, ভোগড়া বাইপাস এলাকার মোবারক ও তন্নী রানী দাসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ৮ আগস্ট স্কুলের নাম করে কিশোরী পালিয়ে যায় প্রেমিক মোবারকের সঙ্গে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২২ আগস্ট) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানা টিম ঢাকার আমিনবাজার এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করে।
থানায় জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরী স্পষ্ট জানায়—আমি স্বেচ্ছায় মোবারকের সঙ্গে পালিয়ে গেছি এবং তাকে বিয়ে করতে চাই। অপহরণ বা মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই। অপরদিকে মোবারকও বলে—আমরা দুজন একে অপরকে ভালোবাসি, কারও ওপর জোর করিনি।
তবে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনা হিসেবে প্রচার করলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেন— এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো ছাড়া কিছু নয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে এটি নিছক প্রেমঘটিত পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা। এ ঘটনায় তিলকে তাল বানিয়ে ধর্মীয় উস্কানি ও গুজব ছড়ানোকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিএমপি পেজে বিষয়টি পোস্ট করার পর ফেসবুকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা মন্তব্য উঠে এসেছে।
সাখাওয়াত হোসেন দবির মন্তব্য করেছেন, অধিকাংশ সময় এ ধরনের মিথ্যা মামলা সাজানো হয়। সত্য উদঘাটন করে ছেলেটার জীবন বাঁচানোর জন্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশকে ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ নাঈম হোসেন মন্তব্য করেছেন, ধর্ম নিয়ে যারা উস্কানিমূলক সংবাদ ছড়ায় তারা সমাজের জন্য ভয়ংকর। মেয়েটি নিজেই পালিয়েছে—এখানে মুক্তিপণের প্রশ্নই আসে না।
আমিনুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় ছবিতেই বোঝা যায় এটি অপহরণ নয়। আমরা সত্য সংবাদ প্রত্যাশা করি।
বাসন থানার ওসি তদন্ত সেলিম বলেন, ওরা হিন্দু-মুসলিম ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, নিজেদের সিদ্ধান্ত নেয়ার বয়স হয়নি। আদালতের নির্দেশই হবে উত্তম সমাধান।