পেট ফুলে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি অনেক সময় গ্যাসের কারণে হয়, তবে সবসময় তা নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি অন্য কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। পেট ফোলা কি গ্যাস্ট্রিক নাকি অন্য কোনো বিপদ, তা বোঝার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ এবং কারণ নিচে আলোচনা করা হলো:
গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেট ফোলা
গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাসজনিত কারণে পেট ফোলা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। কিছু খাবার হজম করতে সমস্যা হলে পেটে গ্যাস তৈরি হয়, যার ফলে পেট ফুলে যায় এবং অস্বস্তি হয়।
লক্ষণ:
হালকা ব্যথা: পেটে হালকা ব্যথা, যা প্রায়শই স্থান পরিবর্তন করে।
ঢেঁকুর ও বায়ু ত্যাগ: ঘন ঘন ঢেঁকুর ওঠা বা বায়ু ত্যাগ করার পর পেট ফোলা কমে যাওয়া।
খাদ্যাভ্যাস: কিছু নির্দিষ্ট খাবার (যেমন: মটরশুঁটি, বাঁধাকপি, কোমল পানীয়) খাওয়ার পর এই সমস্যা বেড়ে যাওয়া।
অন্যান্য গুরুতর রোগের লক্ষণ
যদি পেট ফোলা সমস্যাটি গ্যাসের কারণে না হয়ে থাকে, তবে তা অন্য কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
১. দীর্ঘস্থায়ী পেট ফোলা: যদি পেট ফোলা সমস্যাটি কয়েক সপ্তাহ বা মাসের পর মাস ধরে চলতে থাকে এবং কোনো ওষুধে কাজ না হয়।
২. ওজন কমে যাওয়া: যদি পেট ফোলা থাকার পাশাপাশি আপনার ওজন দ্রুত কমতে থাকে, তাহলে এটি অন্ত্রের কোনো সমস্যা বা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
৩. পেটে তীব্র ব্যথা: যদি পেটে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা শুরু হয়, বমি বমি ভাব, জ্বর এবং মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন আসে, তাহলে তা গ্যাস্ট্রিক নয় বরং আরও গুরুতর কোনো সমস্যার (যেমন: অন্ত্রে বাধা) লক্ষণ হতে পারে।
৪. জন্ডিস বা ত্বকের হলুদ ভাব: লিভারের কোনো গুরুতর সমস্যা বা পিত্তথলির রোগের কারণেও পেট ফুলে যেতে পারে। এর সঙ্গে জন্ডিস (ত্বক বা চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া) বা গাঢ় প্রস্রাব হতে পারে।
৫. ঋতুচক্রে পরিবর্তন: মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি পেট ফোলা সমস্যা ঋতুচক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত না হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, তবে এটি ওভারিয়ান সিস্ট বা অন্য কোনো স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
যদি আপনার পেট ফোলা সমস্যার সঙ্গে উপরের গুরুতর লক্ষণগুলোর কোনোটি দেখা যায়, তবে দেরি না করে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং সময় মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।