বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ স্থগিত করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের। সম্প্রতি জুলাই বিপ্লব নিয়ে সমালোচিত বক্তব্য দেওয়ায় এ ব্যবস্থা নিয়েছে দলটি।
বর্ষীয়ান নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা রাখা ফজলুর রহমানের পদ স্থগিত হওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে রাজনীতিতে। এ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হয়। সম্প্রতি সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন তার গণমাধ্যম ঠিকানায় টকশোতে গয়েশ্বরকে প্রশ্ন করেন, বিএনপিতে কি মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত হচ্ছেন? ফজলুর রহমান সম্প্রতি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন এমন সুরে তিনি আগেও কথা বলেছেন। এখন কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
গয়েশ্বর রায় বলেন, ফজলুর রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তার আলাদা মর্যাদা রয়েছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা বলে কোনো অপরাধ করলে তার বিচার করবেন না? ফজলুর রহমানের বক্তব্যের ভেতরে গত কয়েকমাস ধরে আক্রমনাত্বক শব্দপ্রয়োগ দেখছি। তার সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়নি। আমি মনে করি তিনি সুন্দর সুন্দর ভাষায় বক্তব্য দিতে পারেন। সেখানে আপত্তিকর শব্দ উচ্চারণ না করলে মনে হয় ভালো হতো।
গয়েশ্বর বলেন, এই ধরেন আমরা এনসিপির সমালোচনা করি না। কারণ তারা বয়সে তরুণ। তাদের ম্যাচিউরিটি আসুক। তাদের অবদানকে ছোট করে দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা একটা কথা বললে আমাকে জবাব দিতে হবে কেন। ফজলুর রহমান বিজ্ঞ লোক। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। উনি এতো সুন্দর ভাষায় তিনি বক্তৃতা করতে পারেন। উনি আপত্তিকর শব্দ প্রয়োগ না করলেও পারতেন।
আপনি বলেছেন পিআর পদ্ধতি খায় না মাথায় দেয়, কেন বলেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, সত্য কথা বলতে আমি পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই বুঝি না। পিআর শব্দটি আমাদের দেশে জনপ্রিয় না আমার কাছে পছন্দের না। সেই কারণে বলছি সেটি খাই না, মাথায় দিই।
আপনাকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট বলা হয়, সত্যতা কতটুকু? এমন প্রশ্নে গয়েশ্বর বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষার রাজনীতিক। আমাকে কখনো ভারতীয় হাইকমিশন কোনো প্রোগ্রামে দাওয়াত দেয়নি। ‘র’-এর কারও সঙ্গে কখনোই আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না।
জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি কেন কোনো কথা বলেনি— এমন প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর রায় বলেন, কোনো দল নিষিদ্ধের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান সমাধান হয় না। সুতরাং এটার কোনো সমাধান নাই।
ভিপি নুরের আহত হওয়ার বিষয়ে বিএনপি নিরব থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নুরের ওপর আক্রমণের বিষয়ে সঠিক সমাধান দেবে সরকার। সব কথা রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সরাসরি বলে না। তার অর্থ কে দোষী সেটি চাপা থাকে না।
কেহ রাজনীতি করে ঘর সংসার চালাই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। এখন রাজনীতি করি। রাজনীতিকে পুজি করে যারা সম্পদশালী হতে চাই, তাদেরকে আমি ঘৃণা করি।
তারেক রহমানের আয়ের উৎস কী জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, তার ট্যাক্স ফাইল আছে নিশ্চয়। উনি ওখানে (লন্ডন) নিশ্চয় কিছু একটা করেন। আমি তো তাকে জিজ্ঞাস করতে পারি না। এ ব্যপারে কেউ জানতেও চায় না, তিনি উত্তরও দেন নাই। তাছাড়া দেশে তো উনার কিছু ব্যবসা আগে থেকেই ছিল।
বিএনপির সব বিষয়ে এখন তারেক রহমান ডিল করেন; খালেদা জিয়াকে তেমন সামনে আসতে দেখা যায় না। তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে সংসদ নির্বাচন হোক, তার পরে দল সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা আগেই তো বলেছি তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন।