Wednesday, October 8, 2025

গাজা শহর দখলে হা*মলা শুরু ই*সরায়েলের, নি*হত আরও ৮১

আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিন গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন।

অন্যদিকে অনাহার ও অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এই অবস্থার মধ্যেই গাজা সিটি দখলে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধজনিত ক্ষুধায় অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তারা গাজার সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র গাজা সিটি দখলের লক্ষ্যে অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু করেছে। সেখানে এখনো প্রায় ১০ লাখ মানুষ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আটকে আছেন।

এদিকে শুধু বুধবারই ক্ষুধায় মারা গেছেন আরও তিন ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে খাদ্যাভাব-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৯ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ জন শিশু।

আরও পড়ুনঃ  ‘শেখ হাসিনা শপথ ভঙ্গ করেছিলেন’, রিমান্ডে আনিসুল হক

আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি হামলার মধ্যে দক্ষিণ গাজার এক তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর হামলায় নিহত হন তিনজন। দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনি জাতীয় বাস্কেটবল দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় মোহাম্মদ শালান। ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে শুধু বুধবারই অন্তত ৩০ জন ত্রাণ প্রত্যাশী নিহত হয়েছেন।

গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া এবং লাগাতার সামরিক হামলার কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, ইসরায়েলের অবরোধ চলায় গাজায় অপুষ্টি মারাত্মকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সংস্থাটি বলেছে, “এটি কেবল ক্ষুধা নয়, এটি হচ্ছে অনাহার।”

আরও পড়ুনঃ  জাতীয় নির্বাচনে কত আসন পাবে জামায়াত জানালেন: শিবির সেক্রেটারি

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, অপুষ্টি হলো এক “নীরব হত্যাকারী” যা আজীবন শারীরিক ক্ষতি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে এবং সাধারণ অসুখকেও প্রাণঘাতী করে তোলে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজা সিটির প্রায় প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজন এখন অপুষ্টিতে ভুগছে।

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন গিশা বলেছে, ইসরায়েল সরকার একের পর এক মিথ্যা যুক্তি দাঁড় করিয়ে গাজায় অনাহারের জন্য দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও বাস্তবে শুরু থেকেই ইসরায়েল ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে এটিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

সংগঠনটি বলেছে, “ইসরায়েল এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং করে যাচ্ছে, যা গাজায় সাহায্য পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।”

এদিকে ইউএনআরডব্লিউএ আবারও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেছে, গাজায় তাদের কর্মীরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করছেন। গাজায় কর্মরত চিকিৎসক ডা. হিন্দ বলেন, “আমরা বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করছি।”

আরও পড়ুনঃ  প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে স্বস্তি পেতে করণীয় নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

অন্য এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, কর্মীদের প্রায়ই “প্রচণ্ড রোদে হেঁটে যেতে হয় কর্মস্থলে” এবং এরপর তারা “অত্যন্ত জরুরি সাহায্যের প্রয়োজনীয় মানুষদের সেবা দিতে কাজ করেন।”

গাজার সিভিল ডিফেন্স জ্বালানি ঘাটতির তীব্র সংকট নিয়ে সতর্ক করেছে। সংস্থাটি বলেছে, জ্বালানির অভাবে তারা জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যায় পড়ছে।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের অনেক গাড়িই মিশনে যাওয়ার পথে বন্ধ হয়ে গেছে, কখনো জ্বালানি সংকটে, কখনো রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রাংশ না থাকায়। ইসরায়েলের এই গণবিধ্বংসী যুদ্ধের হুমকির মধ্যে আমরা ভয়াবহ মানবিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি।”

আপনার মতামত লিখুনঃ

জনপ্রিয় সংবাদ