Wednesday, August 13, 2025

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল—জাফরিনের বর্ণনা

আরও পড়ুন

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের খাস কামরায় তিনি জবানবন্দি দেন।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাঁকে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন তাঁর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আদালত তাঁর জবানবন্দি সন্ধ্যা পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আজ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জাফরিন ওই বৈঠকে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ওই বৈঠকে বক্তব্য রেখেছিলেন বলেও স্বীকার করেছেন।

তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ দেওয়ার পরেই নেতা-কর্মীরা ঢাকায় সমবেত হবে এবং পরে শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এসব পরিকল্পনা হয়েছিল বৈঠকে। বৈঠকে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার শপথও নেন অংশগ্রহণকারীরা।

আরও পড়ুনঃ  অবশেষে রাষ্ট সংস্কারের রূপরেখা দিল জামায়াত

৭ আগস্ট জাফরিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর আগে গত বুধবার (৬ আগস্ট) রাতে ডিবির একটি দল তাঁকে আটক করে। রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের গোপন বৈঠকে গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে এর আগে মেজর সাদিককে আটক করা হয়। সেনা আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি ক্যান্টনমেন্টে আছেন। সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় জাফরিনকেও আটক করা হয়।

এ ঘটনায় গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করে। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন।

আরও পড়ুনঃ  এবার থানা ঘেরাও করে দুই পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা

মামলায় গ্রেপ্তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাদুজ্জামান মোল্লার স্ত্রী শামীমা নাসরিন শম্পা ও বরগুনার সোহেল রানার দুই দিনের রিমান্ড শেষে গত ১৬ জুলাই কারাগারে পাঠানো হয়। ২৯ জুলাই আটজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁরা হলেন চুয়াডাঙ্গার আজিজুল মিজি, ফরিদপুরের আনজুমান আরা বেগম, ঢাকার সাভারের সুলতান মাহমুদ ওরফে তছলিম মাহমুদ, পটুয়াখালীর মো. নাঈম হাওলাদার, ভোলা জেলার মো. হেলাল উদ্দিন, নরসিংদীর মো. ইমরান হোসেন, শরীয়তপুরের মুক্তা আক্তার, রাজশাহীর নবিউল প্রকাশ নবু।

আরও পড়ুনঃ  প্রথম স্বামীর মৃত্যু, ফেসবুক পোস্টে যা লিখলেন পরীমণি!

গত ৩০ জুলাই চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁরা হলেন মানিকগঞ্জ জেলার রাজীব মিয়া, নওগাঁর ওমর ফারুক সৈকত, রাজধানীর বংশালের হাজি নাসির আহমেদ ও নোয়াখালী মো. এনাম হোসেন সুজন এবং ৩১ জুলাই নেত্রকোনার জাহিদ হোসেন, সিলেটের আনার মিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

৩ আগস্ট রাজবাড়ীর প্রীতম কুমার দে ও শফিকুল ইসলাম সজীবকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত মোট ২২ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদনান নামে আরেক আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। ৭ আগস্ট রিমান্ড শুনানির সময় জাফরিন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বলেন ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠকের সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ