পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের সাথে সম্ভাব্য সাক্ষাতের আশঙ্কায় জুন মাসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে অস্বীকৃতি জানান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
শনিবার (৯ আগস্ট) সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, নয়াদিল্লির রাশিয়ান তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় জরিমানা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেন ট্রাম্প। এতে ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপ করা শুল্ক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কারণ ভারত ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অন্যায় ও অন্যায্য বলে দাবি করেছে।
এর আগে মে মাসে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে চার দিনের সংঘাতের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দাবি করেছেন ট্রাম্প। যা বারবার দিল্লি উড়িয়ে দিয়েছে। সংঘর্ষের পরের সপ্তাহগুলোতেও ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকেও আতিথ্য দিয়েছিলেন।
ব্লুমবার্গ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের বারবার ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতিতে কৃতিত্ব দাবি এবং ভারত বিষয়টিকে অবহেলা করার কারণে দুই নেতার মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
জুনে কানাডায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্পের পীড়াপীড়িতে দুই নেতা ফোনে কথা বলেন, যেখানে মোদি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ফোনালাপটি ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল।
মোদি ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে এই সময়ের মধ্যে, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি বা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতার মতো কোনো বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আলোচনা সম্পর্কে বলেছিলেন। সামরিক পদক্ষেপ বন্ধের জন্য আলোচনা সরাসরি বিদ্যমান সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে এবং পাকিস্তানের জোরের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হয়েছিল।
মোদির সহযোগীরা যখন জানতে পারেন যে ট্রাম্প পরের দিন হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানি সেনাপ্রধান অসীম মুনিরের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করার পরিকল্পনা করছেন, তখন মুনিরের সঙ্গে সম্ভাব্য সাক্ষাৎ এড়াতেই তিনি ট্রাম্পের আমন্ত্রণে সাড়া দেননি।
ট্রাম্পের পাকিস্তানের বেসামরিক নেতৃত্বের সাথে সাক্ষাতে ভারত স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও, ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে আতিথেয়তা দেয়াকে ভারতীয় বক্তব্যের প্রতি একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়েছিল।
মুনির এবং মোদির মধ্যে ট্রাম্প একটি বৈঠক আয়োজন করতে চাইবেন কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ভারতীয় নেতা কানাডা থেকে ফেরার পথে হোয়াইট হাউসে থামার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।