Monday, December 23, 2024

জোর করে আবু সাঈদের পরিবারকে গণভবনে নেওয়া হয়

আরও পড়ুন

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে জোরজবরদস্তি করে গণভবনে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই রমজান আলী।

শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলার পর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি।

ড. ইউনূসের সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে চাইলে রমজান আলী বলেন, তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে আমাদের পাশে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

শেখ হাসিনা জোরজবরদস্তি করে আমাদের গণভবনে নিয়ে যান, আর ইনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাসায় আসছেন। এটা তো আমাদের সৌভাগ্য।

আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ছেলের নামে সরকারি হাসপাতাল চেয়েছি। যাতে মানুষ বিনামূল্যে ওষুধ পায়। একটা মসজিদের দাবি জানাইছি। রাস্তা-কলেজের নামকরণ করতে বলছি।

আরও পড়ুনঃ  ঈদ উপহারের শাড়ি পেলেন দুই বন্ধুর স্ত্রী, সমালোচনার জবাব দিলেন ব্যারিস্টার সুমন

তার নামে যেন মাদরাসা হয়। আর ছেলে হত্যার বিচার চাইছি। উনি সব করবেন বলে কথা দিছেন। শুধু আজ নয়, সব সময় পাশে থাকবেন। উনি অনেক ভালো মানুষ।

আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর হৃদয়বিদারক কান্না আর আহাজারি করেন তার বোন সুমি আক্তার। বিশ্ব দরবারে তার আহাজারিতে লাখো মানুষের চোখ ভিজেছে। সেই সুমি আক্তার বলেন, স্যারের কাছে আমার ভাইকে যে হত্যা করেছে তার ফাঁসি চাইছি।

এর পেছনে যারা আছে, যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের ফাঁসি চাইছি। আমার ভাইয়ের মতো যারা আন্দোলনে মারা গেছে, তারা যেন ন্যায্যবিচার পায়। আবু সাঈদের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা ক্যাম্পাস, মসজিদ-মাদরাসা, রাস্তা, কালভার্ট যেন তৈরি করা হয়। আমার ভাইকে যেন শহীদ মর্যাদা দেওয়া হয়। আমরা এই দাবিগুলো উপস্থাপন করছি। উনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সবগুলো বাস্তবায়ন করবেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘লাভের আশায় তদবির করবেন না’ দায়িত্ব নিয়েই আসিফ মাহমুদ

আবু সাঈদের আরেক ভাই হোসেন আলী বলেন, এতদিন ভয়ে আমরা কিছু বলতে পারিনি। তারপরও আমাদের বিষয়টা অনেকে জানে। আমরা তো গণভবনে যেতাম না, যদি প্রশাসন থেকে আমাদের ওপর চাপ দেওয়া না হতো।

আজকে নতুন বাংলাদেশের নতুন সরকার আমাদের বাড়িতে এসে খোঁজখবর নিয়েছে। এটাই তো বড় পাওয়া। আমরা চাই সাঈদের আত্মত্যাগের যেন মূল্যায়ন হয়। তার খুনিদের যেন বিচার হয়।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সামনের সাড়িতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।

আরও পড়ুনঃ  ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ মনে করে না : মাহমুদুর রহমান

একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। পরদিন ১৭ জুলাই তাকে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। তাকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সারা দেশে আন্দোলন নতুন মাত্রা খুঁজে পায়।

সাহসের সঞ্চারে ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানে শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ক্ষমতার মসনদ ছেড়ে গণভবন থেকে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশত্যাগের সময় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন, যা সেনাপ্রধান ওইদিন জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে দেশবাসীকে অবগত করেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ