কোটা প্রথার বিলুপ্ত করতে না পারলে সর্বস্তরে শতভাগ কোটা চালু করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারীরা।
তারা বলেন, কোটা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের বৈষম্য। আমরা সরকারকে আহ্বান করব, অবিলম্বে কোটা প্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করুন, অন্যথায় দেশে শতভাগ কোটা পদ্ধতি চালু করে দিন। যাদের কোটা থাকবে কেবল তারাই চাকরি পাবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাকরির দরকার নেই।
সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধ চলাকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা কলেজের সমন্বয়ক মো. রাকিব হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক জিনিস নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি রাষ্ট্রীয় আদর্শ। সারা বাংলাদেশের সব নাগরিকসহ আমরা তরুণরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রত্যেকেই সেই আদর্শ ধারণ করি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যেমন বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, তেমনি আমরাও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করছি। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ছাত্র সমাজ রাজপথে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, আমাদের এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আন্দোলন। আমরা চাই সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিক। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাবে। আর যদি দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা ঘরে ফিরব না।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া রফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের যদি বাধ্য করা হয় আমরা প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাব। পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা আজ সায়েন্সল্যাবে জড়ো হয়েছি। পরবর্তী কর্মসূচি যা দেওয়া হবে, আমরা সে অনুযায়ী পালন করব।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ’ ব্যানারে ঢাকা কলেজ গেট এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর সিটি কলেজ, ইডেন কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে যুক্ত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নেই’— ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
অবরোধে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মাথায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দেখা গেছে। কেউ কেউ মাথায় ‘কোটামুক্ত দেশ চাই’ এমন লেখাযুক্ত ফিতা বেঁধে রেখেছেন।