Monday, August 18, 2025

রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশনা নিয়ে মুখ খোলেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আরও পড়ুন

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিস থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরানোর মৌখিক নির্দেশনা পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনা পাওয়ার পর এরই মধ্যে কয়েকটি দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আবার অনেক দূতাবাস জানিয়েছে তারা ৫ আগস্টের পরপরই এসব ছবি সরিয়ে ফেলেছে।

কয়েকটি দূতাবাস গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। দিনভর সাংবাদিকরা অপেক্ষা করেও কারও কাছ থেকে কোনো বক্তব্য মেলেনি।

এক সভা শেষ অপেক্ষমান সাংবাদিকদের এড়িয়ে রোববার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে যান পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। অন্য বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেও রাষ্ট্রপতির ছবি সংক্রান্ত প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমানও। তবে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের পতনের এক বছরেরও পরে কেনইবা হঠাৎ করে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর এই নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতি অপসারণ বা পদত্যাগ করছেন কি না এমন প্রশ্ন রেখে রোববার সকাল থেকেই অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিতে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ  অবশেষে জানা গেলো বেইলি রোডে আগুনের ‘আসল কারণ’

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপমিশন রয়েছে। তারমধ্যে ওয়াশিংটন, দিল্লি, বেইজিংসহ ৬৫টির বেশি মিশন ও উপমিশন থেকে গত বছরের ৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সংবিধান অনুযায়ী শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানানো ছিল একটা রেওয়াজ। এখন ‘কারও ছবি থাকবে না’–সেই নীতির বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  জবি শিক্ষার্থীদের কথা শুনতে সচিবালয়ের সামনে উপদেষ্টা নাহিদ

মূলত গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অবস্থিত দূতাবাসে শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ করা হয়। ফলে বাকি মিশনগুলো থেকেও সরানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নতুন এই নির্দেশনা পাঠানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য এক সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরের সময় কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

অন্য দূতাবাসে ছবি সরানো হলেও এখানে কেন সরানো হয়নি, সেই প্রশ্ন ওঠে। এরপরই সবগুলো মিশন থেকে ছবি সরানোর উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। তবে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা কয়েক মাস আগেই ছবি সরানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, যেমনটা বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো করেছে।

আরও পড়ুনঃ  দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি, আমরা বসে নেই: পিনা*কী ভট্টাচার্য

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গুঞ্জন শোনা যায়, গত ১১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় সফরে জেনেভায় যান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জেনেভা দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির ছবি দেখতে পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবেন বলেও মন্তব্য করেন।

যদিও এ ধরনের কোনো মন্তব্য বা অসন্তোষ প্রকাশ করার কথা সরাসরি তিনি সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেছেন। রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমি জেনেভা দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির কোনো ছবি দেখিনি। এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্যও করিনি বা মন্ত্রণালয়কে কিছু জানাইনি।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ