Tuesday, June 10, 2025

একই ভবনের ওপরে স্কুল, নিচে মদের বার

আরও পড়ুন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে মেঘনা নদীর উপর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পার হলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমানায় আশুগঞ্জ উপজেলা। উপজেলার গোলচত্বরে ১১তলা বিশিষ্ট আধুনিক আর জে টাওয়ার নামে একটি বহুতল ভবনের অবস্থান। ভবনজুড়ে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের আশুগঞ্জ শাখা। তবে একই ভবনের নিচতলায় রয়েছে ‘মদের বার’।

সরেজমিনে দেখা যায়, আর জে টাওয়ারের মূল ফটকের সামনে আর জে টাওয়ার হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লেখা বিশাল সাইনবোর্ড। আর ১১তলা ওই ভবনের পুরোটাজুড়ে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজেরে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড আর ফেস্টুন। বাইরে থেকেই দেখা যাচ্ছিলো লিফটে করে শিক্ষার্থীরা উঠা-নামা করছে।

মূল ফটক হয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই বাম পাশে বহুতল এ ভবনের বিশাল দরজা। দরজার ভেতরে রয়েছে মদের বার। ভেতরে প্রবেশ করতেই এক নিরাপত্তারক্ষী জানালেন- ‘একটু অপেক্ষা করতে হবে। সবাই দুপুরের খাবার খেতে গেছেন। বসে খেতে বিকেল নাগাদ অপেক্ষা করতে হবে আর পার্সেল এখনই নেওয়া যাবে।’

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশি রুহেলকে ধরিয়ে দিলে ২০ হাজার ডলার দেবে এফবিআই

একই ভবনে মদের বার আর স্কুল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। অনেকে জানালেন, পানশালা এখান থেকে সরে গেছে বলেই তারা জানতেন। কিন্তু এখনো আছে জেনে অবাক হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছিলেন এটি দ্রুত সরে যাবে। কিন্তু এখনো সরে না যাওয়ায় হতাশ।’

জানা গেছে, আর জে টাওয়ার মূলত আমোদ-প্রমোদের একটি ভবন হিসেবেই পরিচিত ছিলো। এটির নীচতলায় আর জে টাওয়ার হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট নামে মদের বার এবং বাকি তলায় আবাসিক হোটেল ছিলো। সম্প্রতি ক্যামব্রিয়ান অ্যাডুকেশন গ্রুপ ওই টাওয়ারটি কিনে নেয়। চলতি বছর এখানে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। তবে এখন পর্যন্ত মদের বারটি সরে না যাওয়ায় অভিভাবকসহ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় বাজেটে জিডিপির দুই শতাংশ অর্থ বরাদ্দ চায় নাগরিক সমাজ

স্কুলে সন্তানকে নিতে আসা মো. মাসুদ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলের সঙ্গে মদের বার থাকা অবশ্যই ঠিক নয়। এখনো যদি বার চালু থাকে তাহলে অবশ্যই এটা সরিয়ে দেওয়া উচিত।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, ‘এ টাওয়ারে এখনো মদের বার রয়েছে, যা কোমলমতি শিশুদের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। পৃথিবীর কোথাও একই ভবনে স্কুল আর মদের বার থাকার নজির আছে বলে জানা নেই।’

আর জে টাওয়ার হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শিহাবের বলেন, ‘বারে বিকেল ৪টার পর থেকে মদ বিক্রি হয়। এসময় স্কুলের কোনো কার্যক্রম থাকে না। এখান থেকে বারটি সরিয়ে নিতে আবেদন করাসহ কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এখান থেকে বারটি শিগগিরই সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এখনো সেই প্রক্রিয়া আমরা শুরু করিনি।’

আরও পড়ুনঃ  জজ কোর্ট চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণ

ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের আশুগঞ্জ শাখার অধ্যক্ষ মোস্তফা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি (মদের বার থাকা) আমাদের জন্য পেইনফুল। আমরাও চাই এটি এখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হোক। একটি স্কুলের ভবনেই মদের বার থাকা একদমই যায় না। তবে এই ভবনের আগের মালিক জানিয়েছেন তিনি এটা সরাতে বলে দিয়েছেন।’

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘মদের বারের মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বারটি সরিয়ে নিতে একমাস সময় চেয়েছেন। যদি একমাসের মধ্যে সরিয়ে না নেয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ