Saturday, June 14, 2025

সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে যে প্রস্তাব দিলেন সেনাপ্রধান

আরও পড়ুন

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার একটি রূপরেখার কথা জানালেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকের-উজ-জামান। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় তার কার্যালয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক বিরল সাক্ষাৎকারে এই রূপরেখা দেন তিনি।

১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয়। তবে ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে বাংলাদেশে সামরিক শাসন শুরু হয়। এরপর নানান চড়াই-উৎরাই পার হয়ে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সামরিক শাসক হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।

আরও পড়ুনঃ  হাসিনার দেশে ফেরা বাস্তবে সম্ভব নয়, অভিমত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের

তবে ২০০৭ সালে দেশে সেনা অভ্যুত্থান হয়। গঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। একে সমর্থন দেয় সেনাবাহিনী। ২০০৯ সালে হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত দুই বছর দেশ শাসন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

বাংলাদেশের এই পট-পরিবর্তনের পুরোটা সময় একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জেনারেল জামান। তিনি বললেন, তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনৈতিকভাবে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। তিনি বলেন, আমি এমন কিছু করব না যা আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর হয়। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।

আরও পড়ুনঃ  পাঁচ বছর পর দেশে ফিরলেন সাং*বাদিক নাজ*মুস সাকিব

সেনাপ্রধান জানান, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশ ব্যাপক সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসব সরকারি সংস্কারের সঙ্গে মিল রেখে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু সেনাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যদি কোনো কর্মরত সেনা সদস্য দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নেব। কিছু সামরিক কর্মকর্তা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রিত সংস্থায় কাজ করার সময় পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করে থাকতে পারেন।

তবে দীর্ঘ মেয়াদে জেনারেল জামান সেনাবাহিনী থেকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দূরে রাখতে চান। তিনি বলেন, এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকে। সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  মেয়েকে গলাকেটে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন বাবা

বর্তমানে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে। এই মন্ত্রণালয় সাধারণত প্রধানমন্ত্রীই নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই অন্তর্বর্তী সরকার একটি সাংবিধানিক সংস্কার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সংশোধনের দিকে নজর দিতে পারে বলে মনে করেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। একজন সৈনিকের রাজনীতিতে জড়িত হওয়া উচিত নয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ