Sunday, June 15, 2025

ঈদের আগের রাতে চেয়ারম্যানের গোডাউনে মিলল দুস্থদের ৬৫ বস্তা চাল

আরও পড়ুন

পাবনার সুজানগরে দুস্থদের খাদ্য সহায়তার ৬৫ বস্তা চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। রোববার (১৬ জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

তবে চেয়ারম্যান এই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করলেও গোডাউনে চাল মজুতের প্রমাণ পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে গোডাউন পরিদর্শন করে এসব তথ্য জানান সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নে ২ হাজার ৩০০ কার্ডে দুস্থদের খাদ্য সহায়তার (ভিজিএফ) চাল বরাদ্দ রয়েছে। যেটি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিতরণ শুরু করে ঈদের আগেই বিতরণ সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু সেগুলো সম্পূর্ণরূপে বিতরণ না করে ইউনিয়নের গোয়ারিয়া বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের ব্যক্তিগত গোডাউনে মজুত রাখা হয়।

আরও পড়ুনঃ  সিলেট সীমান্তের জঙ্গল থেকে বিচারপতি মানিক আটক

রোববার (১৬ জুন) সন্ধ্যার পর সেই গোডাউন থেকে একেকটি ভ্যানে সাত থেকে আট বস্তা করে চাল বিভিন্ন জায়গায় যেতে লক্ষ্য করেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গোডাউনের পাশে লোকজন জড়ো হতে থাকলে চেয়ারম্যানের লোকজন গোডাউন বন্ধ করে সটকে পড়েন। এ ধরণের অভিযোগ পেয়ে রাত ২টার দিকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই গোডাউন পরিদর্শনে গিয়ে ৬৫ বস্তা চাল জব্দ করেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোববার সন্ধ্যা থেকে ভ্যানে করে ৩০ কেজি বস্তার ভিজিএফ’র চাল গোডাউন থেকে বের হচ্ছে। তখন আনুমানিক দেড় থেকে ২০০ বস্তার মতো চাল ছিল। এভাবেই দুস্থদের চাল নিয়মের বাইরে তার ব্যক্তিগত লোকদের দেয়া হয় এবং পরে সেগুলো তারা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বস্তা দরে বিক্রি করেন। এতে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হন। এ ধরণের অনিয়মের বিচার হওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ  ১১ আগস্ট পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত

গোয়ারিয়া বাজার এলাকার ভ্যানচালক আবুল কাশেম বলেন, সব ইউনিয়নে ঈদের আগে চাল দিয়ে দিছে। অথচ এখানে গরীবের বাড়ি না গিয়ে চাল চেয়ারম্যানের গোডাউনে। এটি অবশ্যই আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। এভাবেই সব আত্মসাৎ হয়ে যাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে দুস্থ ও গরীবেরা।

এদিকে আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র দাবি করেছেন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো লোক চাল নিতে আসে নাই। বাধ্য হয়ে তাদের চাল গোডাউনে রাখা হয়েছে। ঈদের পরে সুবিধাভোগীদের ডেকে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া এটি ব্যক্তিগত গোডাউন নয়, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য অনুমোদিত গোডাউন।

আরও পড়ুনঃ  ‘বাই বাই রাসেলস ভাইপার ওয়েলকাম পরীমণি’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, আপাতত ৬৫ বস্তা চাল গোডাউনে পেয়েছি। যেটি ঈদের আগেই বিতরণ শেষ হবার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান বলছেন অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো সুবিধাভোগী চাল নিতে আসে নাই। সেগুলো উনি গোডাউনে রেখেছেন। যেগুলো বিতরণের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ঠিকঠাক বিতরণ হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।

মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ আরও বলেন, ওই ৬৫ বস্তা চাল জব্দ করে ইউপি সচিব, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রেখে আসা হয়েছে। এতোগুলো চাল বিতরণ হয়নি অথচ উনি (চেয়ারম্যান) সংশ্লিষ্ট কাউকেই জানাননি। এখানে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এছাড়া আত্মসাতের অভিযোগসহ অন্যান্য সকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ