নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু জেন জি প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভে উত্তাল। সরকারিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলা এই বিক্ষোভ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করেছে। এসময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের মাথা ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা লাঠি, গাছের ডাল ও পানির বোতল নিয়ে পুলিশের মোকাবিলা করেছে, আবার পুলিশ জবাব হিসেবে জলকামান, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় যখন কিছু বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।
নেপাল পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। কারফিউ অঞ্চলগুলির মধ্যে রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন, সিংহ দরবার, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ও আশপাশের এলাকা অন্তর্ভুক্ত। কারফিউ স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বিক্ষোভের মূল কারণ সরকারি নির্দেশে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও এক্স (পূর্বে টুইটার) বন্ধ করা এবং দেশব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। হাজার হাজার যুবক ও শিক্ষার্থী এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
নেপালের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-প্রতিষ্ঠান এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এদিকে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকাকালীন মৃত্যু বরণ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন সকালেই সিভিল হাসপাতালে মারা গেছেন। বাকি মৃতদের মধ্যে দুইজন সিভিল হাসপাতালে এবং চারজন ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ড নেপালের জেন জি প্রজন্মের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাসে অন্যতম ক্রান্তিকালীন ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হবে।