‘ইমাম মাহাদী’ দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার বিষয়ে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদী’ দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা এবং তার লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মুখ খুলেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি নিজের এবং স্থানীয় প্রশাসনের দায়মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
একই সঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে তাকে জড়ানোর প্রচেষ্টাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন।
গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে শরিয়ত পরিপন্থী পদ্ধতিতে দাফনের অভিযোগ এনে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা দরবার শরীফে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন এবং রাসেল মোল্লা নামের এক যুবক নিহত হন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে জামায়াত আমিরের মো. নুরুল ইসলাম জানান, সর্ব দলীয় ও সর্ব মহলের ইমান আকিদাহ সংরক্ষণ কমিটির পক্ষ হতে গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে শুক্রবার বাদ জুম্মা গোয়ালন্দ উপজেলায় কোনো মিছিল হবে না। গোয়ালন্দ উপজেলায় শুধুমাত্র সমাবেশ হবে।
জেলা ইমান আকিদাহ কমিটির সভাপতি মাওলানা ইলিয়াস আলী মোল্লা গোয়ালন্দ উপজেলা ইমাম কমিটির সভাপতিকে বিষয়টি জানিয়ে দেন। শুক্রবার দুপুরে আমি নিজে ঘটনাস্থল গোয়ালন্দ নুরাল পাগলের বাসা পরিদর্শন করি এবং সেখানে মাটি সমতলে তারা লাশ নেওয়ার কার্যক্রম দেখতে দেখতে পাই।
তখন উপস্থিত সাংবাদিকরা আমাকে লাশ নামানো নিয়ে প্রশ্ন করলে আমি তাদেরকে প্রশ্নের উত্তরে জানাই গোয়ালন্দ উপজেলায় লাশ নামিয়ে সমতলে আনাতে গোয়ালন্দ উপজেলায় শুধুমাত্র সমাবেশ হবে মিছিল হবে না। ব্যক্তিগতভাবে বিএনপির দুই গ্রুপের সঙ্গে আমি গোয়ালন্দ উপজেলা ইমান আকিদাহ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জালাল এবং অন্যান্য সদস্যর মধ্যে অধ্যক্ষ কে এ মুইত হিরা, কাশেম মন্ডলকে মিছিল না করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানাই। তারা আমাকে আশ্বস্ত করে, তারা সেখানে আলোচনা করে ঠিক করে পরবর্তীতে আমাকে জানাবে। কিন্তু সেখানে মিছিল হবে সেটা আমার জানা ছিল না। আমার সব বক্তব্য এবং লাইভ আকারে আছে। আমি যা বলেছি মিডিয়ার সামনে বলেছি।
স্ট্যাটাসে জেলা আমির আরও লিখেছেন, এ ঘটনায় আমি দুঃখিত। এ ঘটনা ন্যক্কারজনক। লাশ মাটি থেকে তুলে পোড়ানো আমার জীবনে আমি শুনিও নাই দেখিও নাই। এই ঘটনাকে আমি ধিক্কার জানাই। মৃত মানুষকে পোড়ানো বা বাড়িঘর লুট করা এটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিক। নুরাল পাগলের এই ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়ানো এবং প্রশ্নবিদ্ধ করা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।