Friday, August 1, 2025

দিশেহারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, ছাড়তে চান রাজনীতি

আরও পড়ুন

দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর দলটি এখন নেতৃত্ব শূন্যতায় ভুগছে।

অথচ গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরপূর্তি পালনেও পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। কিন্তু মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি পাল্টে গেছে।

শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর শীর্ষ নেতারাও অনেকে দেশ ছেড়েছেন। আবার কেউ কেউ ‘দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে’ গ্রেপ্তার হয়েছেন। এছাড়া নেতাদের মধ্যে এখনও যারা দেশে অবস্থান করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘আত্মগোপনে’ আছেন।

বর্তমানে নেতৃত্ব শূন্য থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম হতাশায় ভুগছে। তাদের অনেকেই এখন উদ্বেগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময় তারা তাদের নামও প্রকাশ করতে চাননি।

আরও পড়ুনঃ  নায়িকা মেঘলার বাসায় লুকিয়ে নায়িকাকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের!

আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের এখন দিশাহারা বিপর্যস্ত অবস্থা হয়ে গেছে। কারণ একমাস হয়ে গেলো অথচ কেন্দ্র থেকে কার্যকর কোনো নির্দেশনা দেয়া হলো না। ফোন দিলেও কেউ ধরে না। হামলা-মামলা সব মিলিয়ে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের অনেকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন।’

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের এখনকার যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, সেটার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করেছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ফরিদেপুরের একজন আওয়ামী লীগের কর্মী বলেন, ‘ক্ষমতা হারালে এমন অবস্থা যে হতে পারে, সেটা তো নেতাদের অজানা থাকার কথা না। তারাই তো এর জন্য দায়ী।’

আরও পড়ুনঃ  রাজনীতি ছেড়ে মাদক আর টিকটকে ব্যস্ত জবি ছাত্রলীগ নেতা

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রিম খাইলো নেতারা, কোটি কোটি টাকা বানাইলো তারা; আর তাদের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হইতেছে আমাদের মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।’

তবে বিদেশে অবস্থান করা আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একাত্তর সালে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। কাজেই দেশ যতদিন থাকবে, আমাদের দলও থাকবে। আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়াবো।’

হামলার ভয়ে নিজেরা গা ঢাকা দিলেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেশিরভাগের পরিবার-পরিজন তাদের এলাকাতে রয়েছেন। তবে আয়-রোজগার না থাকায় সংসার চালাতে গিয়ে অনেকের স্ত্রী-সন্তানরা বিপাকে পড়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  নির্বাচনে অসংগতির তথ্যচিত্র বিদেশিদের দেবে বিএনপি

পালিয়ে ঢাকায় আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগের কর্মী বলেন, ‘আমরা নিজেরাই তো পালিয়ে বেড়াচ্ছি, কাজ-কাম করবো কী করে? আর আয় না থাকলে সংসারের কী অবস্থা হয়, তা তো বুঝতেই পারছেন?’।

পেশায় অটোচালক ওই ব্যক্তি জানান, সংসার চালাতে না পেরে তার স্ত্রী প্রায়ই ফোন করে কান্নাকাটি করে। তিনি বলেন, ‘এভাবে কতদিন থাকবে? ভাবতে গেলেই কান্না আসে। মনে হচ্ছে, রাজনীতি করাই পাপ হয়েছে। তাই আর রাজনীতি করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিছি।’” বিবিসি বাংলাকে বলেন ফরিদপুরের ওই আওয়ামী লীগ কর্মী।

কর্মীদের মধ্যে আরও অনেকেই এমন সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের এক নেতা।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ