Thursday, January 16, 2025

‘আমাকে সঙ্গে নিয়ে চলেন, লাশ দেখাব’ যুবকের কথায় হতবাক থানার অফিসার

আরও পড়ুন

ফেনীর সোনাগাজীতে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন স্বামী। বুধবার (১২ জুন) ভোরে সোনাগাজী উপজেলার পৌরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে হত্যা করেন। পরে বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে থানায় হাজির হন তিনি।

নিহত গৃহবধূর নাম সিনথিয়া ইসলাম খুশবু (২৪)। আটক স্বামী আলী আক্কাস রনি (২৫)। পেশায় তিনি জুতা বিক্রেতা। রনির গ্রামের বাড়ি ভোলায় এবং খুশবুর বাড়ি বরিশালে। সোনাগাজী পৌরসভার চর গণেশের শেখপাড়া এলাকার ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন তারা।

বাসার আশপাশের একাধিক বাসিন্দা জানান, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো থাকলেও গত কিছুদিন ধরে তারা প্রায় ঝগড়ায় লিপ্ত হতেন। রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়ার আওয়াজ শোনা গেলেও হত্যাকাণ্ডের কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। পুলিশ আসারপর পর ঘটনাটি আমরা জানতে পারি। নিহতের স্বামী পৌরসভার জিরো পয়েন্টে রাস্তায় জুতা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। প্রেম করে বিয়ের পর পরিবার মেনে না নেয়ায় তারা সোনাগাজীতে এসে বসবাস শুরু করেন।

আরও পড়ুনঃ  মুক্তিযুদ্ধ আম*রাই শুরু করেছি, শেষ*ও করেছি আমরা : সাখাওয়াত

বাসার মালিক শিউলি আক্তার বলেন, তিন মাস আগে রনি তার স্ত্রীকে নিয়ে আমার বাসার একটি ইউনিট ভাড়া নেন। মাঝেমধ্যে তাদের দুজনের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হতো। আমরা ডেকে উভয়কে বুঝিয়ে বিষয়টা সমাধান করে দিতাম। সকালে বাড়িতে পুলিশ আসার পর জানতে পারি রনি তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে।

এদিকে, থানায় ঢুকেই পুলিশ কর্মকর্তাদের রনি বললেন, স্ত্রীকে গলা কেটে খুন করেছেন। ২৫-২৬ বছর বয়সী যুবকের মুখে সাতসকালে এমন কথা শুনে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তারা খুব একটা পাত্তা দেননি। কিন্তু যুবক তার কথায় অটল। শেষে জোর দিয়ে বললেন, ‘আমাকে সঙ্গে নিয়ে চলেন, লাশ দেখাব।’ এরপর নড়েচড়ে বসেন ডিউটি অফিসার। ওই সময় ফোন করে বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানান তিনি। ওসি সঙ্গে সঙ্গে থানায় আসেন। যুবককে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় গিয়ে দেখেন এক নারীর গলাকাটা লাশ পড়ে আছে।

আরও পড়ুনঃ  মরদেহের খণ্ডাংশ মিলেছে— শুনে যা বললেন আনারকন্যা

সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুদ্বীপ রায় জানান, দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। মঙ্গলবার রাতে বাসায় তরকারি আনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। সারারাত ঝগড়া করে ভোরে খুশবুকে বটি দিয়ে দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে রনি। পরে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে থানার সামনে এসে তিনি এক পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পরে ঘটনাস্থলে গেলে এর সত্যতা পাওয়া যায়। সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি দা ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রয়োজনে আবারও রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি: সারজিস

তিনি আরও জানান, খুশবুর হাত, গলা ও কানে কোপের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের পরিবারকে ফোন করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানানো হয়েছে। তারা অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ