Monday, December 23, 2024

কওমি মাদ্রাসার শিশুদের করুণ কাহিনী তুলে ধরলেন জয়া আহসান

আরও পড়ুন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইতোমধ্যে ঢালিউড-টালিউড মাতিয়ে অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন বলিউডেও। পর্দায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তোলেন এই নায়িকা। সাবলীল অঙ্গভঙ্গি আর অভিনয় দক্ষতায় বরাবরই দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যান তিনি।

শুধু অভিনয় নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডে সরব থাকার পাশাপাশি পশুপাখির প্রতি প্রাণীদের প্রতি জয়ার ভালোবাসা বরাবরই চোখের পড়ার মতন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় তিনি। প্রায় সময়ই নানান ইস্যুতে নিজের মতামত কিংবা অনুভূতি ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভোলেন না এই অভিনেত্রী। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। এবার কওমি মাদরাসাগুলোর করুণ দৃশ্য নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন তিনি।

জয়া আহসানের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘বর্তমান সমাজে এতিম অসহায় শিশুর সংখ্যা কম নয়। দরিদ্র অসহায় দুঃস্থ ও এতিমদের জন্য ইসলাম সমাজের ওপর অনেক দায়িত্ব দিয়েছে। রোজার শেষ দিকে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতে এক করুণ দৃশ্য দেখা যায়। সাধারণত ২৫ রোজা থেকে মাদ্রাসাগুলো ছুটি হতে থাকে। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক এসে বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু একদল বাচ্চাকে নিতে কেউ আসে না।’

আরও পড়ুনঃ  রাজকুমার সিনেমায় মাহির মেকআপেই সময় লাগত ৫ ঘণ্টা

জয়া লিখেছেন, ‘এদের কারও বাবা-মা নেই, কারও বাবা নেই মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। অনেকের মা নেই, বাবা বাচ্চার খোঁজ রাখে না। খুব বেশি ভাগ্যবান হলে কারও কারও মামা খালা চাচা এসে কাউকে কাউকে নিয়ে যায়। বাকিরা সারা দিন কান্না করে। তারা জানে তাদের কেউ নিতে আসবে না। তারা সারা বছর কাঁদে না। কিন্তু যখন সহপাঠীদের সবাই বাসায় নিয়ে যায় অথচ তাদের কেউ নিতে আসে না তখন তাদের দুঃখ শুরু হয়ে যায়। মৃত মা বাবার ওপর তাদের অভিমান সৃষ্টি হয়- কেন তারা তাদের দুনিয়ায় রেখে এই বয়সে মারা গেল? তারা কি আর কিছুটা দিন বেঁচে থাকতে পারত না? মা-বাবা বেঁচে নাই তো কী হইছে? মামা চাচারা কেউ তাদের নিতে আসল না কেন? মা বেঁচে থাকতে মামারা কত আদর করত! বাবা বেঁচে থাকতে চাচারা কত আদর করত! এই বয়সেই তারা দুনিয়ার একটা নিষ্ঠুর চেহারা দেখেছে।’

আরও পড়ুনঃ  হালাল-হারাম নিয়ে একটু ভাবি, এটা খুব জরুরি: বর্ষা

তিনি আরও লিখেছেন, ‘একটা অনুরোধ- এই ঈদে আপনার কাছাকাছি এতিমখানায় যান। কয়জন বাচ্চা ঈদে বাড়ি যায়নি খোঁজ নিন। তাদের জন্য আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যা পারেন তা নিয়ে যান। এই গরমে তাদের আইসক্রিম খাওয়াতে পারেন। নিজের পক্ষে একটা চকলেট খাওয়ান। মনে রাখবেন, আজ আপনি বেঁচে না থাকলে আপনার ছোট সন্তান এতিম হয়ে যাবে! আমি ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব যদি আল্লাহ্ সহায়ক হয়।’ ‘কালেক্টেড’।

অভিনেত্রী জয়া আহসানের ফেসবুক পোস্ট এরইমধ্যে ভাইরাল। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জীবন যাপনের করুণ কাহিনী তুলে ধরায় নেটিজেনদের অনেকেই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  সালমান শাহকে হারানোর ২৫ বছর আজ

জাকির হোসেন নামে একজন লিখেছেন, পৃথিবীটা মানুষের হোক। ওদের নিয়ে ভাবার জন্য, কিছু লেখার জন্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা। আফতাব হোসেন নামে আরেকজন লিখেছেন, দারুন অনুভূতি আমাদের সকলের মাঝে মানবতা জাগ্রত হোক।

সবীব নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য। ধর্মনিরপেক্ষভাবে কথা বলার জন্য এবং অসহায় মানুষের চিন্তা করার জন্য আরও ধন্যবাদ। আশা করি আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী এমন মানুষের পাশে থাকবেন এবং অন্যকে পাশে থাকার জন্য আগ্রহী করবেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ