Wednesday, September 17, 2025

ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ইউএনও’র স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেইল, দেহরক্ষী গ্রেপ্তার

আরও পড়ুন

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) স্ত্রীকে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা আদায় করেছে একটি চক্র। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘটনার পরে ১২ মার্চ অজ্ঞাতনামা চক্র উল্লেখ করে চাঁদবাজি মামলা করেন ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাসের স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস।

এ ঘটনায় আনসার সদস্য আকাশ বিশ্বাসকে (২৭) চাঁদাবাজি মামলায় আটক করে পুলিশ। আকাশ খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর গ্রামের মৃত নিহার বিশ্বাসের ছেলে। গত দুই বছর ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়া এডাল্ট ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ব্যবহৃত নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে কল করে একটি অশ্লীল ভিডিওর কথা বলে ফোন দেয় একটি চক্র। এরপর তার স্বামী ইউএনওকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। চক্রটি একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর মুঠোফোনে হুমকি দেয়।

আরও পড়ুনঃ  ঈদের জামাতে নামাজরত অবস্থায় ভাইয়ের মৃত্যু, খবর শুনে মারা গেলেন বোনও

এই ঘটনায় ভীত হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি চক্রের পাঠানো ডাচ বাংলা ব্যাংকের হিসাবে ৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ৬ হাজার টাকা প্রেরণ করে। ভয়ের বশবর্তী হয়ে বিপাশা বিশ্বাস তার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বামীর সম্মান ও জীবনের নিরাপত্তায় পর্যায়ক্রমে হুমকিদাতার ব্যাংক একাউন্টে টাকা দেয়। মামলার এজাহারে ইউএনও’র স্ত্রী এডাল্ট ভিডিও কি তা উল্লেখ করেননি। এমনকি তা দেখতেও পাননি বলে উল্লেখ করেছেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, টাকা পাঠানোর সময় ইউএনও’র গাড়িতে থাকা দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ পরামর্শ দেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে একাউন্টে টাকা পাঠানো যায়। এ কথার সূত্র ধরে আকাশকে সন্দেহ করেন ইউএনও’র স্ত্রী বিপাশা।

আরও পড়ুনঃ  নারায়ণগঞ্জে মসজিদের মাইকে ঘোষণা, গণপিটুনিতে ৪ জন নিহত

লোহাগড়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১১ তারিখ বিকেলে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে ছুটি শেষে কাজে যোগদানের উদ্দেশে দেহরক্ষী আকাশ লক্ষীপাশা বাসস্ট্যান্ডে নামলে পুলিশ তাকে আটক করে। ১২ মার্চ মঙ্গলবার মামলা রজু করে পরদিন গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

অভিযুক্ত দেহরক্ষী আকাশের ভাই সমর বলেন, সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হোক। তাতে যদি আকাশ অপরাধ করে থাকে তার শাস্তি হোক। সে যদি কোনও আক্রোশের স্বীকার হয়ে থাকে তাহলে প্রশাসন ও সরকারের কাছে জোর দাবি সঠিক তদন্ত যেন হয়।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ইউএনও’র স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস স্ত্রীর করা চাঁদাবাজি মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিচারাধীন বিষয়ে কিছুই বলতে চান না।

আরও পড়ুনঃ  রাজধানীতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ ৬

এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, গার্ড আকাশের জড়িত থাকার ব্যাপারে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। চাঁদাবাজি মামলায় সম্পৃক্ততার কারণে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনাটি শুনেছি এটা আমাদের বাহিনীর জন্য স্পর্শকাতর। এটা বিভাগীয় বিষয় হলে মামলা কিংবা আটকের আগে বিভাগীয় অনুমোদন প্রয়োজন কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন অবশ্যই এটা আনসার বিভাগকে অবগত করা উচিত ছিল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ