আসছেন খেয়ালখুশি মত। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই তুলছেন বেতন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার শ্যালিকার পরিচয়ে করছেন অনিয়ম। এমন অভিযোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খায়রুন্নেছা ইভার বিরুদ্ধে। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের ২২১ নং পশ্চিম বটকাজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তার অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমস্যার সমাধান আসছে না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইভা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক হিসেবে ইভা ওই বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি ওই বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন না। প্রতিমাসে বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে আসেন।
একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট পাঁচ জন শিক্ষক রয়েছেন। খায়রুন্নেছা ইভা প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষক। তিনি বিদ্যালয়ে না আসায় প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। ইভা নামের কোনো শিক্ষক যে আছেন, তা জানেনও না শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনজুমান আরা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে তার বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ক্লাসগুলো ম্যানেজ করতে বাকি শিক্ষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া খায়রুন্নেছা ইভা প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি ছাড়া প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি পরিচালনা করা অসম্ভব। তার ক্লাসটি অন্য শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেওয়াটাও দৃষ্টিকটু। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবহিত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার শ্যালিকা পরিচয় দিয়ে খায়রুন্নেছা ইভা প্রভাব বিস্তার করছেন। তাই তিনি যোগদানের পর থেকে ক্লাস করাচ্ছেন না। প্রতিমাসে বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস অবহিত থাকলেও খায়রুন্নেছা ইভার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার বলেন, অজ পাড়া গাঁয়ে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঠদান বঞ্চিত হোক, তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমি অনুপস্থিত সহকারি শিক্ষক ইভার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারি শিক্ষক খায়রুন্নেছা ইভা বলেন, আমি নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাই। মাঝে কিছুদিন অন্য বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে (সংযুক্তি) ছিলাম। ডেপুটেশনের কোনো অফিসিয়াল আদেশ আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি এড়িয়ে যান।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি উর্ধ্ব কর্মকর্তাদের অবহিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।