হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর ঠিক আগে মুহূর্তের ড্রোন ফুটেজ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ফুটেজে নিহত হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে সিনওয়ার ড্রোনের দিকে একটি কাঠের টুকরো ছুঁড়ে মারতে দেখা যায়।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভিডিওতে দেখা যায়, দেওয়াল উড়ে গেছে, শুধু ছাদটুকু টিকে আছে কোনোমতে- এরকম প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি দোতলা ভবন। চারদিকে ধুলো উড়ছে। মুখোমুখি দুটি সোফার একটিতে এক ব্যক্তি বসে রয়েছেন। তাকে মুখোশ পরে থাকতে দেখা যায় গুরুতর জখম অবস্থায়। এমন একটি ফুটেজ প্রকাশ করে ইসরায়েল দাবি করেছে, এটা হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার।
ভিডিওটির শেষের দিকে দেখা যায়, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মাথা সামনের দিকে ঝুঁকে গেছে। বাঁ হাতে ধরা একটা কাঠের টুকরো। ড্রোন কাছে যেতেই সেই কাঠের টুকরো ছুঁড়ে মারলেন তিনি। এতেই ড্রোন ফুটেজটি বন্ধ হয়ে যায়।
আইডিএফের মুখপাত্র রিয়াল অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেন এবং সিনওয়ারের মৃত্যু নিশ্চিত করে বিবৃতি দেন। এই বিবৃতিতে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ঘটনাগুলোর বর্ণনা দেন।
হ্যাগারি বলেন, ‘সিনওয়ার যেখানে লুকিয়ে ছিলেন, সে জায়গাটিকে আমাদের বাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে ঘিরে রেখেছিল। আমরা নিশ্চিত ছিলাম না যে তিনি সেখানে আছেন কি না। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা সংকল্পবদ্ধ ভাবে অভিযান চালিয়ে যাই।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র বলেন, ‘বোমাবর্ষণে ধুলিস্যাৎ হয়ে যায় সামরিক ভবন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার গুলিতে জখম হওয়ার পর একটি দোতলা বাড়িতে লুকিয়ে পড়েন। এরপর ড্রোন নামিয়ে এলাকা স্ক্যান করে তাকে খঁজে পাই। তখন তার গায়ে একটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, সঙ্গে একটি পিস্তল ও ৪০ হাজার শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) ছিল। তিনি পালানোর চেষ্টা করলে আমাদের সেনারা তাকে হত্যা করে।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ বলেছেন, ‘আমরা ডিএনএ পরীক্ষা করেছি। তিনি হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার।’
তবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি হামাস।
হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস নেতাদের হত্যার মাধ্যমে গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করা যাবে না।
হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল মনে বিশ্বাস করে আমাদের নেতাদের হত্যা করা মানে আমাদের আন্দোলন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সংগ্রামের সমাপ্ত হয়ে যাবে। তবে হামাস একটি মুক্তিকামী আন্দোলন- যাকে নির্মূল করা যায় না। দলটি বিশ্বাস করে এর ভাগ্য ‘হয় বিজয়, না হয় শাহাদাত’।
তবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেননি এই হামাস নেতা।