Monday, December 23, 2024

শেখ হাসিনার বিচার ঢাকায় নয়, হবে দ্য হেগে

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর ঢাকায় বিচারের মুখোমুখি হবেন না। বরং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তাকে বিচার করা হবে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এখন সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের অপেক্ষা করছে।

এই তদন্তের মূল বিষয় হচ্ছে জুলাই ও আগস্ট মাসে সংঘটিত মুনসুন রেভুলেশনে এক হাজারের বেশি ছাত্র ও বিক্ষোভকারীর মর্মান্তিক মৃত্যু। ওএইচসিআর-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার আইসিসিতে মামলা দায়ের করবে। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশের সব কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান

গত সেপ্টেম্বরে ড. ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগদানে গেলে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সময় তিনি ওএইচসিআর-এর প্রধান ফোলকার টার্ক এবং প্রধান প্রসিকিউটর করিম আসাদ আহমদ খানের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক চাপ এড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এই দিনই তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে একটি সামরিক বিমানে করে ভারতে যান। এখন তিনি সেখানেই নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তার সঙ্গে তার বোন শেখ রেহানাও রয়েছেন। এরপর বেশ কয়েকটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলেও কোনো দেশই সাড়া দেয়নি। এমনকি তার একমাত্র মিত্র ভারত সরকারও এই বিষয়ে চুপ রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রাজধানী পরিবহনের ৩০টি বাস আটক করল জাবি শিক্ষার্থীরা

একবার আইসিসির কার্যক্রম শুরু হলে বিশ্ব আদালত তাকে নেদারল্যান্ডসে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানাবে। আইসিসি সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ ভারত এই প্রত্যর্পণের অনুরোধ আইনত এড়াতে পারবে না। যদি হাসিনা দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তিনি দীর্ঘ কারাদণ্ড বা ইউরোপের কোনো কারাগারে আজীবন সাজা ভোগ করতে পারেন।

বাংলাদেশ তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনতে যাচ্ছে। এদের মধ্যে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং গোপন কারাগারে ভিন্নমতাবলম্বীদের আটকের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তবে হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে আইসিসি তেমন আগ্রহী নয়।

আরও পড়ুনঃ  তারাবিহ ও সেহরিতে লোডশেডিং হবে না : প্রধানমন্ত্রী

বিচারের ফলাফল যাই হোক না কেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে একজন নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুনসুন রেভুলেশন দমনের নামে ছাত্র ও বিক্ষোভকারীদের হত্যার দায়ে নিন্দিত হয়ে থাকবেন।

বিচারের পথটা দীর্ঘ ও অনিশ্চিত। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শেখ হাসিনাকে তার কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেষ পর্যন্ত তিনি যা করেছেন তার পরিণতি তিনি ঢাকায় নয়, দ্য হেগেই ভোগ করবেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ