Monday, December 23, 2024

যে অভিজ্ঞতায় জাহাজ ও নাবিক উদ্ধার করবে কেএসআরএম

আরও পড়ুন

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি ২৩ নাবিক ও ক্রুদের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার দাবি করেছেন সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কবির স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলের (কেএসআরএম) সহযোগী সংস্থা এসআর শিপিং লাইনসের।

এর আগে, এই কোম্পানির একটি জাহাজ (এমভি জাহানমণি) ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেবার ২৬ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ১০০ দিন পর তাদের মুক্ত করে এনেছিল কোম্পানি। ফলে এবারও পূর্বের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় কবির গ্রুপ।

জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। পণ্যবাহী জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মালিকপক্ষ জিম্মি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রদের উপদেষ্টা করলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাদ যাবে?

কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রথমে নাবিকদের সুরক্ষার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। তারা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, এটি নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতাও আছে। আমরা আশা করছি, অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নাবিক ও জাহাজটি ফিরিয়ে আনতে পারবো। প্রয়োজনে মধ্যস্থতা সংস্থা ও ব্রিটিশ বীমা কোম্পানির সহায়তা নেয়া হবে।

এদিকে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিকউল্লাহ খান এক অডিও বার্তায় মঙ্গলবারই জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে কী পরিমাণ খাবার ও পানি আছে জাহাজে এসব তথ্য জানিয়েছেন। জাহাজটি জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর পরই তাদের এ বার্তা পাঠান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  আইনজীবী সাইফুল হত্যায় অংশ নেওয়া আরেকজন গ্রেপ্তার

আতিকউল্লাহ খান অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের জাহাজে ২০–২৫ দিনের রসদ (খাবার) আছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি আছে। আর জাহাজে রয়েছে ৫৫ হাজার টন কয়লা। রসদ যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায়, সে জন্য অপ্রয়োজনে ব্যবহার না করার জন্য সবাইকে জানানো হয়েছে।

জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এখনো জলদস্যুরা যোগাযোগ করেনি। এ হিসেবে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই খাবার দিয়ে চলতে হবে জাহাজের নাবিক ও দস্যুদের।

মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা।

আরও পড়ুনঃ  শিবিরের প্যাডে নাম, ক্ষোভ প্রকাশ করে যা বললেন পূজা চেরী

যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছে। দুটি নৌযানে (একটি বড় এবং আরেকটি ছোট) চড়ে জাহাজটির কাছাকাছি এসে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইউকে এমটিও সমুদ্র চলাচলকারী অন্য জাহাজগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে বলেছে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের কবলেপড়া বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঁচার আকুতি জানিয়ে এরইমধ্যে অডিও বার্তা দিয়েছেন জিম্মিরা।

এর আগে ২০১০ সালে একই গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি জাহানমণি ছিনতাই হওয়ার তিন মাস পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছিল গ্রুপটি। আবার কোনো জাহাজ ছয় থেকে আট মাস পর মুক্ত হওয়ার নজিরও রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ