দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় পর সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি। তবে এরপরও যেন থামছে না ইসরায়েলের হামলা। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও দক্ষিণ ও মধ্য গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় বৃহস্পতিবার দুই ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্যরা আহত হয়েছেন। একটি মেডিকেল সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার পশ্চিম রাফাহের তেল আল-সুলতান এলাকার একটি বাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলি আর্টিলারি হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে।
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চুক্তির অধীনে আশপাশের এলাকাটিকে ‘নিরাপদ’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে ফিলিস্তিনিরা ফিরে যেতে পারে।
আরেকটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, আল-বুরেজ শরণার্থী শিবিরের পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আহত একজন ফিলিস্তিনিকে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর ফলে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের আপাতত অবসান ঘটলেও ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আক্রমণে নিখোঁজ রয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিরিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টিও রয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।