Monday, December 23, 2024

বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত : প্রধানমন্ত্রী

আরও পড়ুন

‘বিএনপির মন্ত্রীদের বউদের ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করতে দেখেছি’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির এক নেতা দেখলাম চাদর খুলে পুড়ল। আমি এখন বলব, বিএনপি নেতারা যদি বাসায় গিয়ে বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান, সেদিন বিশ্বাস করব আপনারা সত্যি ভারতীয় শাড়ি বর্জন করলেন। ভারতীয় মসলা তারা খেতে পারবে কি না, এ উত্তর তাদের দিতে হবে। আপনারা এ পণ্য সত্যি বর্জন করছেন কি না, এ কথাটাই আমরা জানতে চাই।

তিনি এরপর যোগ করেন, যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? ঈদের আগে দেখতাম, বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত।

বিএনপি নেতাদের কখনও আক্কেল হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে তারা এখন ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো ভুলে যাচ্ছে। তাদের কখনও আক্কেল হবে না। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তখন তারা কে কোথায় ছিল? যিনি বলে যান যে আওয়ামী লীগ নেতারা ২৫ মার্চ পালিয়ে গিয়েছিল, তার বাবা কে ছিল? স্বাধীনতার পর ৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়, তখন খাদ্যসচিব ছিল। এই খাদ্যসচিব বেইমানি করে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছিল। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর তখন পুরস্কার পেয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  তিন জেলায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

শেখ হাসিনা বলেন, মঈন খানের বাবার নাম হলো মোমিন খান। সে ছিল খাদ্যসচিব। জাহাজ ফিরিয়ে দিয়ে খাবার আসতে দেয়নি বাংলাদেশে, দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। আমি ৮১ সালে দেশে আসি। সারা বাংলাদেশ ঘুরি। তখন প্রতিবছর দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন তারা করতে পারেনি। কারণ, তারা আমাদের বিজয় নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। যার কারণে জাতির পিতাকে হত্যা করল। এরপর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। আজ রাজনৈতিক দল করে অনেক বড় বড় কথা বলে তারা।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম হলো কলকাতায়। ভারত-পাকিস্তান যখন বিভক্ত হয়, তখন তারা কিন্তু পূর্ব বাংলায় আসেনি, তারা করাচিতে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেখানে পড়াশোনা করে। সেখানেই আর্মিতে যোগ দেয়। সেখান থেকে সামরিক অফিসার হিসাবে পূর্ব বাংলায় এসেছিল দায়িত্ব পালন করতে। এটাই হলো বাস্তবতা। কিন্তু তার মনে তো পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে। তার প্রমাণও আছে। স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলো, এই প্রমোশনগুলা একে একে কে দিয়েছে? এটাও তো আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছে। এই অকৃতজ্ঞরা সেটাও ভুলে যায়।

আরও পড়ুনঃ  দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বিএনপিকে দায়ী করলেন ওবায়দুল কাদের

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিএনপির নেতারা বড় বড় কথা বলে, ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের সবাই পালিয়ে গেছে। অথচ আওয়ামী লীগই সরকার গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করে। শুধু যুদ্ধ পরিচালনা নয়, সশস্ত্র বাহিনীর গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশকে ভাগ করা হয়। এক একটা সেক্টরের দায়িত্ব একেকজনকে দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমান একটা বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান। এই কথা নিশ্চয়ই তাদের ভুলে গেলে চলবে না।

প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল। যারা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যারিকেড দিচ্ছিল, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সেই সময় যারা বেরিক্যাড দিয়েছে, জিয়াউর রহমানও তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্যুয়াজ জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ২৫ মার্চ এ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যে আক্রমণ চালায় সেই আক্রমণকারীর একজন কিন্তু জিয়াউর রহমান।

আরও পড়ুনঃ  যুবলীগ নেতাকে বিএনপি কর্মী বানিয়ে দল থেকে বহিস্কার

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু আঁতেল আছে। বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাংলাদেশে একটা কাণ্ড আমরা দেখি, অতি বাম, অতি ডান। স্বাভাবিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারাটা তারা পছন্দ করেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করেছি। ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর ছিল এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর। দেশটা ছিল পরাধীন। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত। সেই জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধ করে, স্বাধীনতার বিজয় এনে দেওয়া একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারীর জন্য সম্ভব। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর এ দেশে ইতিহাস বিকৃতির পালা দেখেছি।আজ যারা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল, আমি জিজ্ঞেস করি আপনারা কোথায় ছিলেন? সেটাও একটু বলেন! জবাব দিন!

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ