বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন স্বপনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে এমন অভিযোগ তুলেছেন খোদ বিএনপির নেতারা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে এমন ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে স্বীকার করেছে উপজেলা বিএনপি।
জানা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ঘটকের চর গ্রামের বাসিন্দা কামাল খান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটির ১৪ নম্বর সদস্য। ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন স্বপনকে ম্যানেজ করে চাঁদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৬১ নম্বর সদস্য পদ দখল করে নেন।
একইভাবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল ঢালী, ফজলু সিকদার রাতারাতি বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান করে নিয়েছেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেত্রী ফারজানা বিনতে ওহাবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্যও ছিলেন তারা।
চাঁদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আলমগীর হোসেন স্বপন আওয়ামী লীগের লোক এনে বিএনপির কমিটি গঠন করছেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি এসব করছেন। আমরা উপজেলার পক্ষ থেকে হাইকমান্ডকে জানিয়েছি।
আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির কমিটিতে স্থান করে নেওয়া একজন জানিয়েছেন, এলাকায় আমার কোনো অপকর্ম নেই। আগে আওয়ামী লীগ করতাম সেটিও ঠিক আছে। এখনতো নিজেকে বাঁচাতে হবে, পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হবে। বিএনপি থেকে প্রস্তাব পেয়েই আমি রাজি হয়ে গেছি। তাছাড়া আমার পরিবারের অন্যরা সবাই বিএনপিতে ভোট দেয়।
বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদ পাওয়া কামাল খান বলেন, আমি সব সময়েই বিএনপির কর্মী-সমর্থক। কখনোই আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করিনি। আওয়ামী লীগের কমিটিতে আমার নাম হয়তো ওই সময়ের নেতারা ভুলে দিয়েছেন। ওই কমিটি সর্ম্পকে জানতামই না, তাই তখন প্রতিবাদও করতে পারিনি।
এ সব বিষয়ে জানতে চাঁদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর খান স্বপনকে একাধিকবার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ওয়াহিদুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, বাবুগঞ্জের ৫টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। সবগুলোর মধ্যেই দুই-একজন আওয়ামী লীগ ঢুকে পড়েছে। আমরা এদের বিএনপি হিসেবেই চিনতাম। কিন্তু তারা গোপনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন বেড়িয়ে আসছে। এদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে অনুপ্রেবেশে যদি কোনো বিএনপির নেতার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।