ঢাকাই সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী পরীমণি। বোট ক্লাবের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গত ২৫ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন তিনি। ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত জামিন দিয়েছেন তাকে। এর আগে ওইদিন সকালে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন এ অভিনেত্রী।
একই দিন দুপুরের দিকে প্রকাশ্যে আসে, পরীমণির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জন্য চাকরি হারাতে বসেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সাকলায়েন। এর আগে অভিনেত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করা হয় তাকে। তবে ঢালিউড তারকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর আগে গোয়েন্দা-গুলশান বিভাগের এডিসির দায়িত্ব পালন করেছেন গোলাম সাকলায়েন।
পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করার পর ঝিনাইদহ ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয় গোলাম সাকলায়েনকে। এ ঘটনায় বিভাগীয় মামলায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে সাকলায়েন-পরীমণি বিষয় নিয়ে যখন নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা, তখনই বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বললেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। তার মতে, পরীমণির সঙ্গে গোলাম সাকলায়েনের আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। অর্থাৎ, নাসির উদ্দিনের সঙ্গে পরীমণির ঘটে যাওয়া ঘটনার আগে থেকেই অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সাকলায়েনের।
এ ব্যবসায়ী বলেন, আমাকে যেদিন গ্রেপ্তার করা হয়, সেদিন ডিবি থেকে সাকলায়েনের আসার অনুমতি ছিল না, কোনো বিশেষ কারণে অপারেশনে যাওয়ার অনুমতি ছিল না তার। এরপরও স্পটে দেখা গেছে তাকে। বেশ উৎফুল্ল ছিলেন তিনি। আমাকে নেয়ার পরদিনই সেখানে পরীমণি গিয়েছিলেন। তাকে সাকলায়েনই নিয়ে গেছেন।
নাসির উদ্দিনের ভাষ্যমতে―সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেই বিষয়টি বাঁধিয়েছে সে, হয়তো এ রকম আরও সাকলায়েন থাকতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালে এডিসি গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে অভিনেত্রী পরীমণির। ওই সময় সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্টের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, নীল ও কালো বেলুনে সুসজ্জিত একটি রুমে রোমান্সে মেতে আছেন তারা। সেখানে সাকলাইনের হাত ধরে কেক কাটতে দেখা যায় অভিনেত্রীকে। আর সাকলায়েনকে উইশ করে ‘হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ’-ও বলেন পরীমণি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৩ জুন বোট ক্লাবের ঘটনার পর পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হলে এ ব্যাপারে মামলা হয়। মামলার পরদিনই অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অভিনেত্রী পরীমণিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আর ওই সময়ই ডিবির গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে পরিচয় হয় অভিনেত্রীর। এরপর নিয়মিত যোগাযোগ হতো দু’জনের। এমনকি পরীমণির বাসায় যাওয়া-আসাও শুরু করেন গোলাম সাকলায়েন। মাঝে মাঝে দু’জন গাড়ি নিয়ে ঘুরতেও বের হতেন।
সূত্রের তথ্য বলছে, সবশেষ পরীমণি ডিবির কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের রাজারবাগের মধুমতি ভবনের বাসায় যান। সেখানে প্রায় ১৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন তারা। আর ২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তারের পর অকপটে সবকিছু স্বীকার করেন পরীমণি।