নতুন বাংলাদেশকে ধামাচাপা দিতে চক্রান্ত চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশকে ধামাচাপা দিতে চক্রান্ত করছে একটি মহল। তাদের মিথ্যা প্রমাণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশে কোনো মতপার্থক্য নেই। ৫ আগস্টের আগের ঐক্য বহাল।’
ঐক্য ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্বকে জানাতে হবে আমরা এক। আমরা যা অর্জন করেছি তা সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায়। যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছিল, তাদের তাড়িয়েছি। আমরা নিজেদের মুক্ত করেছি। পুরো বিশ্বের কাছে এটা আমাদের তুলে ধরতে হবে।’
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক আহ্বান করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে যোগ দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিকেল ৪টায় শুরু হয় বৈঠক।
বৈঠকে যোগ দেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এ দলে আরও ছিলেন ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এছাড়াও বৈঠকে আসেন জামায়াতে ইসলামি, সিপিবি, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাসদ, এলডিপিসহ ১২দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ জাসদ, এনডিএমসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। আর বৃহস্পতিবার বৈঠক করবেন বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে।
গত সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় দেশটির একদল উগ্রবাদী জনতা। এ সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুনও দেয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। ভারত–বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কে এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি।
এ ঘটনায় সোমবারই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপর ছিল না।
এদিকে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের হাইকমিশন, ডেপুটি হাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ত্রিপুরা সরকার মঙ্গলবার তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত এবং একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।