Monday, December 23, 2024

ঢাবিতে আমরণ অনশনে ৮ শিক্ষার্থী

আরও পড়ুন

জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী ‘সন্ত্রাসী’দের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বৃষ্টিতে ভিজে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ৮ শিক্ষার্থী। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সশরীরে এসে আশ্বাস প্রদান না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দুপুর ২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে তারা বৃষ্টিতে ভিজে অনশন চালিয়ে যেতে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তিনজন শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যের মূল বেদিতে বসে আছেন। এ সময় তাদের বৃষ্টিতে ভেজার কারণে ঠান্ডায় কাঁপতে দেখা যায়। ত্রিপল বা ছাতার নিচে বসে অনশন করতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা।

আরও পড়ুনঃ  দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ও মাইক্রোবাস ভর্তি মানুষ এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায়। তারা একটি এনজিওর ঋণ দেওয়ার আশ্বাসে ঢাকায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি চক্র অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাদের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনেছেন। এ অবস্থায় রাত থেকে ক্যাম্পাস ও শাহবাগ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকায় আসা ব্যক্তি ও ক্যাম্পাস থেকে জানা গেছে, এনজিও সংস্থার পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু ব্যক্তি মানুষকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা বলেছেন, ঢাকায় গেলে বিনা সুদে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। অনেকের কাছ থেকে এ জন্য ১ হাজার টাকা করেও নিয়েছে। এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা গাড়িতে করে ঢাকায় এসেছেন।

অনশন পালনকারীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজোয়ান আহমেদ রিফাত, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জীম, আইন বিভাগের রেদোয়ানুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী এবং সহ-সমন্বয়ক রিফাত রিদওয়ান, একই বিভাগ ও সেশনের শিক্ষার্থী ও সহ-সমন্বয়ক মো. আরমানুল ইসলাম, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন ইমন, ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী মিনহাজুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজের শিক্ষার্থী সুহাইল মাহদীন।

আরও পড়ুনঃ  ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তুমি বাবা’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজোয়ান আহমেদ রিফাত বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে কোনো শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্বৈরাচারের কথায় যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে, অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে শহীদ করেছে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা আজ অনশনে বসেছি।

সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জীম বলেন, ৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা আসলেও এখনো সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কিছু মামলা হলেও তাদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। আমরা আজ অনশনে বসেছি যেন এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতার নিয়ে আসা হয়।

আরও পড়ুনঃ  মাত্রই সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, তাদেরকে গুছিয়ে নিতে সময় দিন

কতক্ষণ এখানে অবস্থান করবেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সশরীরে এখানে এসে যদি আমাদের আশ্বস্ত না করেন তাহলে আমরা এখান থেকে সরব না। তিনি অফিসে বসে ঘোষণা দিলেও হবে না।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বাধীনতা এসেছে। এখন সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কেন এত কালক্ষেপণ আমি জানি না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কেন তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিচ্ছেন না, সেটা বুঝতে পারছি না। আমরা চাই তিনি যেন এখানে এসে আমাদের নিশ্চিত করেন যে সন্ত্রাসীদের অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। অন্যথায় আমরা এই অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ