সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বর্তমান অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল। সম্প্রতি জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর তিনি কলকাতায় পৌঁছেছেন। তবে ৫ আগস্ট থেকে প্রায় তিন মাস তিনি কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
তথ্য অনুযায়ী, তিনি এক বিশেষ স্থানে ছিলেন, যেখানে তার প্রতি যত্ন নেওয়া হচ্ছিল। পরে তিনি সবুজ সংকেত পাওয়ার পর সড়কপথে ভারতের মেঘালয়ের শিলং পৌঁছান এবং সেখান থেকে কলকাতায় চলে যান। দিল্লি নয়, কলকাতাতেই তিনি অবস্থান করছেন, এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে তার জন্য কিছু লোক ভারত সরকারের কাছে লবি করলেও, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে নীরব ছিলেন।
তবে সম্প্রতি কাদেরের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে এবং তার হোয়াটসঅ্যাপও ছিল অচল। আওয়ামী লীগের বিরোধী নেতারা জানিয়েছেন, তারা একেবারে নিশ্চিত যে কাদের কলকাতায় আছেন এবং সেখানেই তিনি নিজেকে গোপন রেখেছেন।
ভারতের ভেতরও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কাদেরের অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, কাদেরই সরকারের পতনের জন্য দায়ী। তারা বলছেন, যদি কাদেরের সঙ্গে দেখা হয়, তবে পরিস্থিতি আরও বিব্রতকর হতে পারে।
এ ছাড়া ওবায়দুল কাদের সরকারের পতনের সময় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, বিশেষ করে ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট’, এই মন্তব্যের পর তিনি আওয়ামী লীগের ভেতর কোণঠাসা হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে একেবারে গুটিয়ে যান।
ক্ষমতায় থাকার সময় কাদের প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে হাজির থাকতেন, কিন্তু পরে তিনি একেবারে লুকিয়ে যেতে শুরু করেন। সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব চলে যায় দলের অন্য নেতাদের কাছে।
কাদের তার দলের নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন। ফোন ধরতেন না, নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। এমনকি, বিএনপির উদ্দেশে তার ‘খেলা হবে’ মন্তব্যের পর, সেই ‘খেলা’ এখন তার পেছনে ছুটছে এবং তিনি নিজেই এখন ‘নিখোঁজ’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কাদেরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ট্রল চলত। তার ‘পালাব না’ মন্তব্য এখন হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে তিনিই বেশি বিতর্কিত ও রহস্যে পরিণত হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন অনেকে।